বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারী বর্ধমান ষ্টেশন ঢোকার মুখে আচমকাই ভেঙে পড়ে শতাব্দী প্রাচীন রেল ষ্টেশন ভবনের সামনের একাংশ। মারা যান একজন যাত্রী। সেই ঘটনার পর রীতিমত গোটা দেশ জুড়েই হৈ চৈ শুরু হয়েছিল। এরপর পরে ফের সিঁড়ি দিয়ে হুড়মুড়িয়ে উঠতে গিয়ে পদপিষ্ট হন কয়েকজন যাত্রী। আর ২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর ফের বর্ধমান ষ্টেশনে শতাব্দী প্রাচীন ধাতব পাতের তৈরী জলের ট্যাঙ্কের একাংশ ভেঙে মৃত্যু হল ৩ জনের। আহত হলেন ৩৪ জন। আর এই ঘটনার পরই রীতিমত রেলের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন সাধারণ যাত্রী থেকে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা। খোদ রেলের একটি সূত্রে জানা গেছে, যে ট্যাঙ্ক বিপর্যয়ে এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সেই ট্যাঙ্ককে সম্প্রতি বাতিল করে দেবার সুপারিশ করেছিল রেলেরই একটি কমিটি। বহু প্রাচীন এই ট্যাঙ্ক যে অচল হয়ে পড়েছে তা নিরীক্ষণ করেই ওই কমিটি এই ট্যাঙ্ককে বাতিল করে দেবার সুপারিশ করেছিল। জানা গেছে, রেলের এই সুপারিশ পেয়েই ষ্টেশন লাগোয়া গুড়সেড রোডে নতুন একটি জল ট্যাঙ্ক করার প্রস্তুতিও শুরু করে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই নতুন ওই ট্যাঙ্কের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পদ্ধতি মেনে কাজও শুরু হয়েছে। ২০২৪-এর জানুয়ারী মাস থেকেই নয়া এই ট্যাঙ্ক তৈরীর কাজ শুরু হবার কথাও রয়েছে গুডসেড রোডে রেলের জায়গাতেই। কিন্তু তারই মাঝে এই ট্যাঙ্ক বিপর্যয় ঘটে গেল। খোদ নিত্যযাত্রীরা জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই এই ট্যাঙ্ক থেকে ক্রমাগত জল পড়ছিল। যাত্রীরা জানিয়েছেন, তারপরেও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল রেলের। যাত্রীরা জানিয়েছেন, যেহেতু দীর্ঘদিন ধরেই ওই ট্যাঙ্ক থেকে জল পড়ছিল তাই ট্যাঙ্কটি যে দুর্বল হয়ে পড়েছে সেটা বোঝা উচিত ছিল রেল কর্তৃপক্ষের। কিন্তু তাঁরা তাতে আমলই দেননি। যার খেসারত দিতে হল যাত্রীদের প্রাণ দিয়ে। এদিন রেল যাত্রীরা জানিয়েছেন, বর্ধমান ষ্টেশন ক্রমশই আতংক ষ্টেশনে পরিণত হচ্ছে। একের পর এক দুর্ঘটনা, মৃত্যুর জেরে যাত্রীরা নিশ্চিন্ত হয়ে বর্ধমান ষ্টেশনে ঢুকতে ভয় পাচ্ছেন। যদিও এই বাতিলের সুপারিশ এবং নতুন ট্যাঙ্ক তৈরীর প্রসঙ্গে রেলের পক্ষ থেকে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।