Breaking News

মাকে খুনে অভিযুক্ত যুবক বেকসুর খালাস, পুলিশি তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ বিচারকের

Lawyers strike. Burdwan District Court

গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- তদন্তে গাফিলতি থাকায় মাকে খুনে অভিযুক্ত যুবককে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে, পুলিশি তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারক। ঘটনার তদন্তে বিস্তর গাফিলতি রয়েছে বলে রায়ে মন্তব্য করেছেন বিচারক। তদন্তকারী অফিসারের ভূমিকার কারণে পুলিশের বদনাম হচ্ছে। এ ধরনের পুলিশি অফিসারদের কারণে বিচার প্রক্রিয়ার পুরো ব্যবস্থার উপর সাধারণ মানুষের আস্থা হারাচ্ছে। সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরাতে এ ধরনের অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। সে কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যাতে তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় তার সুপারিশ করেছেন বিচারক। সে কারণে রায়ের কপি জেলার পুলিশ সুপারকে পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক বিভাস চট্টোপাধ্যায়।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালের ২৩ মে ভাতার হাসপাতালে লক্ষ্মী মুর্মু (৫১)-কে গুরুতর জখম অবস্থায় আনা হয়। ভাতার থানার দাওড়াডাঙায় তাঁর বাড়ি। চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাঁর নাক ও কান দিয়ে রক্ত বেরিয়েছিল। ঘটনার বিষয়ে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্তে নামে বর্ধমান থানা। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে লক্ষ্মীকে খুন করা হয়েছে বলে জানানো হয়। এরপর সেই বছরের ১১ জুলাই ভাতার থানার আইসি প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে খুন ও প্রমাণ লোপাটের ধারায় মামলা রুজু হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ মৃতের ছেলে মঙ্গল মুর্মুকে গ্রেপ্তার করে। তাকে হেফাজতে নিয়ে খুনে ব্যবহৃত একটি লোহার রড উদ্ধার করে পুলিশ। সেই বছরেরই ২১ ডিসেম্বর মঙ্গলের বিরুদ্ধে খুন ও প্রমাণ লোপাটের ধারায় চার্জশিট পেশ করেন তদন্তকারী অফিসার স্নেহাশিস চৌধুরি। মামলায় ১৯ জনকে সাক্ষী করা হয়। সেই মামলায় প্রমাণাভাবে অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করেছেন প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক। অভিযুক্তের আইনজীবী গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদালতে জিজ্ঞাসায় তদন্তকারী অফিসার স্বীকার করেন, খুনে ব্যবহৃত রডে কোনও সিল ছিল না। রডটি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়নি। তিনি ঘটনাস্থলের স্কেচ ম্যাপ করেন নি। তাও তিনি মেনে নেন। বিচারকের জিজ্ঞাসায় তিনি যে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহেরও কোনও আবেদন আদালতে জানান নি তাও মেনে নেন তদন্তকারী অফিসার। পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় মঙ্গলের বয়ানের ভিডিওগ্রাফি অথবা অডিওগ্রাফিও করানো হয়নি বলে বিচারকের জিজ্ঞাসায় স্বীকার করে নেন তদন্তকারী অফিসার। তদন্তে বাজেয়াপ্ত হওয়া রড ও মৃতার রক্তমাখা শাড়ি ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন বিচারক। এছাড়াও বাজেয়াপ্ত হওয়া রডে ধৃতের হাতের ছাপ ছিল কিনা তাও জানা অত্যন্ত জরুরি ছিল। কিন্তু, এক্ষেত্রে শাড়ি ও লোহার রড ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়নি। একে তদন্তে গাফিলতি বলেই রায়ে উল্লেখ করেছেন বিচারক।

About admin

Check Also

The fifth short film festival was organized in Burdwan

বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *