বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- কয়লা কারবারি রাজু ঝা-কে খুনের মামলায় জড়িত রঞ্জন কুমারকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা নিয়ে টালবাহানা চলছে। ঘটনায় রঞ্জনের জড়িত থাকার কথা জেনেছেন সিটের তদন্তকারীরা। তাকে বিহারের হাজিপুর জেলে গিয়ে একদফা জিজ্ঞাসাবাদও করেছেন তদন্তকারীরা। এর আগে গত মঙ্গলবার তাকে বিহারের হাজিপুর জেল থেকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করার কথা ছিল। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেল সুপারকে নিের্দশ দেন সিজেএম। কিন্তু, তাকে পেশ করা হয়নি। কেন তাকে পেশ করা হল না সে ব্যাপারে হাজিপুর জেলের সুপারের কাছ থেকে লিখিত ব্যাখ্যা তলব করেন সিজেএম চন্দা হাসমত। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পেশ করার জন্য ফের নিের্দশ দেন সিজেএম। এমনকি প্রোডাকশন ওয়ারেন্টও পাঠানো হয়। তারপরও রঞ্জনকে হাজিপুর জেল থেকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়নি। তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা অত্যন্ত জরুরি। হাজিপুর জেল কর্তৃপক্ষ আদালতের নিের্দশ সত্ত্বেও তাকে পেশ না করায় আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এসবের মধ্যেই হাজিপুরের জেল সুপার সেখানকার আদালতে রঞ্জনকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা সংক্রান্ত নিের্দশের কথা জানিয়েছেন। সেখানকার ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করার জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন জেল সুপার। বিষয়টি ই-মেল করে হাজিপুর জেলের সুপার বর্ধমান আদালতকে জানিয়েছেন। জেল সুপারের এ ধরণের আচরণে বিস্মিত সিজেএম। এ ব্যাপারে ফের হাজিপুর জেল সুপারের কৈফিয়ৎ তলব করেছেন সিজেএম। আগামী ২১ ডিসেম্বর রঞ্জনকে অবশ্যই আদালতে পেশ করার জন্য নিের্দশ দিয়েছেন সিজেএম চন্দা হাসমত। কোন পরিস্থিতিতে রঞ্জনকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা যায়নি তার লিখিত ব্যাখ্যা সেদিনই দিতে হবে হাজিপুরের জেল সুপারকে।
উল্লেখ্য, গত ১ এপ্রিল শক্তিগড়ে দুষ্কৃতিদের গুলিতে খুন হন রাজু। তদন্তে নেমে পুলিস ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে আদালতে ইতিমধ্যেই চার্জশিট পেশ করেছে পুলিস। মামলাটি পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে বিচারাধীন। এরই মধ্যে নদিয়ার রাণাঘাটে স্বর্ণবিপনিতে ডাকাতির মামলায় বৈশালির কুখ্যাত শার্প শ্যুটার কুন্দন সিং গ্রেপ্তার হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রাজু খুনে তার জড়িত থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিস। এরপরই খুনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে হেফাজতে নেয় শক্তিগড় থানার পুলিস। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনায় বিহারের বৈশালি জেলার বিদুপুরের রঞ্জন কুমারের জড়িত থাকার কথা জানতে পারেন রাজু খুনে গঠিত সিটের তদন্তকারীরা। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১০ নভেম্বর বিদুপুর থানার পুলিস অস্ত্র উদ্ধারের মামলায় গ্রেপ্তার করে রঞ্জনকে। সে বর্তমানে হাজিপুর জেলে রয়েছে। সিজেএম আদালতের অনুমতি নিয়ে সিটের তদন্তকারীরা হাজিপুর জেলে গিয়ে রঞ্জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাতে রাজু খুনে রঞ্জনের জড়িত থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিস। এরপরই তাকে সিজেএম আদালতে পেশ করার জন্য আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার।