বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমানের মিষ্টি হাবের স্থান কি পরিবর্তন হতে চলেছে? শনিবার থেকে এই প্রশ্নই নতুন করে উঁকি দিল বর্ধমানের ব্যবসায়ী মহলে। এদিন থেকেই নতুন করে একেবারে শেষ চেষ্টা শুরু হল বর্ধমানের বিতর্কিত মিষ্টি হাব চালু করার জন্য। উদ্যোগী হলেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী। শনিবার সকালে তিনি বর্ধমানের বামচাঁদাইপুরে ২নং জাতীয় সড়কের ধারে মিষ্টি হাব পরিদর্শন করেন। সঙ্গে ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, স্থানীয় বর্ধমান উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ মালিক প্রমুখরাও। প্রায় ২ বছরেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত। এমনকি দফায় দফায় চেষ্টা করেও – কখনও চাপ দিয়ে কখনও বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিলেও আজও চালু হয়নি মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের মিষ্টিহাব। অথচ ২০১৭ সালের ৭ এপ্রিল আসানসোল থেকে এই স্বপ্নের মিষ্টিহাবের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। প্রায় ২৫টি দোকান নিয়ে প্রথম কয়েকদিন হৈ হৈ করে শুরু হলেও খদ্দেরের অভাবে বন্ধ হতে থাকে মিষ্টি হাবের বিভিন্ন স্টলের সাটার। নামমাত্র ভাবে একটি স্টল চালু থাকলেও খদ্দের না থাকায় তিনি নিয়ম করে খুললেও তাতে তাঁর লাভ কিছু হয়নি। বরং বিদ্যুতের বিল বাবদ টাকা দিতে গিয়েই তাঁর লোকসান হয়েছে বেশি। এদিকে, মিষ্টি হাব চালু না হওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করে প্রশাসনের বিরুদ্ধেই। বিশেষ করে মিষ্টি হাবের জায়গা চিহ্নিত করা নিয়েই প্রশ্নে বিঁধতে থাকে জেলা প্রশাসন। এদিনও তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ মালিক এই প্রশ্নই ছুঁড়ে দেন জেলাশাসকের দিকে। ইতিমধ্যেই দফায় দফায় মিষ্টি হাবকে চালু করার জন্য বৈঠক চলতেই থাকে। বিগত ২ বছরে জেলাশাসক থেকে জেলা প্রশাসনের কর্তারা বহুবার বৈঠক করলেও লাভ হয়নি। এমনকি মিষ্টি হাবের বিভিন্ন স্টলে বর্ধমান জেলার নামী দামী মিষ্টির পাশাপাশি আশপাশের জেলাগুলির খ্যাতনামা মিষ্টিও রাখার প্রতিশ্রুতি থাকলেও বাস্তবে তার কোনোটাই রুপায়িত হয়নি। এদিকে, মিষ্টি হাবকে চালু করার জন্য বিভিন্ন সংস্থাকেও ডেকে আনা হয়। মিষ্টির পাশাপাশি ফাষ্টফুডের দোকানও রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু মূল সমস্যা দেখা দেয় বর্ধমান শহরের একপাশে ২নং জাতীয় সড়কের পাশে এমন জায়গায় তৈরী করা হয়েছে যেখানে কোনো বাসস্ট্যাণ্ড নিয়ে। ফলে স্টল হোল্ডাররা বারবার প্রশাসনের কাছে মিষ্টি হাবের সামনে বাসের স্ট্যাণ্ড তৈরী এবং সেখানে সবরকমের বাস দাঁড়ানোর জন্য আবেদন জানানো চলতেই থাকে। সম্প্রতি বর্ধমান নতুন জেলাশাসক হিসাবে দায়িত্বভার নিয়েছেন বিজয় ভারতী। মিষ্টিহাবকে চালু করার ব্যাপারে তিনিও উদ্যোগী হয়েছেন। শনিবার তিনি মিষ্টি হাব পরিদর্শনও করেন। কথা বলেন বিভিন্ন স্টলহোল্ডারদের সঙ্গেও। উল্লেখ্য, মিষ্টি হাবকে চালু করতে ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসন আইআইটি খড়গপুরের বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিচ্ছেন। গুণগত মান বজায় রাখতে মিষ্টি হাবে ল্যাবরেটরিও রাখার ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মিষ্টিহাবকে চাঙ্গা করতে গত জানুয়ারি মাসে সপ্তাহ খানেক ধরে মিষ্টি উৎসবেরও আয়োজন করা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কিন্তু কোন উদ্যোগই সফল হয় নি। এদিন জেলাশাসক জানিয়েছেন, এদিন মিষ্টিহাবের সামনে পার্কিং নিয়ে জায়গা দেখা হয়েছে। কি ভাবে গাড়ি দাঁড় করানো যায় সেই নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, আগে কি হয়েছে তিনি জানেন না। তিনি মিষ্টি হাব চালু করেই ছাড়বেন। একইসঙ্গে জেলাশাসক এদিন প্রথম মিষ্টি হাবের জন্য যে জমি দেখা হয়েছিল সেই জায়গাটিও পরিদর্শন করেন। জেলাশাসক এদিন জানিয়েছেন, তিনি শেষ চেষ্টা করছেন মিষ্টি হাবকে চালু করার জন্য। এজন্য বিভিন্ন নামীদামী খাবার সংস্থাকেও আমন্ত্রণ জানানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু তারপরেও যদি না চলে? উত্তরে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রয়োজনে মিষ্টি হাবের জায়গাই পরিবর্তন করা হবে।
Tags Misti Hub
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …