বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- সরকারি জায়গাতে কোনো রকম প্ল্যান ছাড়াই হচ্ছিল অবৈধ নির্মাণ, খবর পেয়ে বন্ধ করল বর্ধমান পুরসভা। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে শহর জুড়ে। গার্ডেনরিচ ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে বর্ধমান পুরসভাও। এদিন অভিযোগ পাওয়া মাত্রই, অবৈধ নির্মাণ বন্ধ করতে নামল পুরসভা। উল্লেখ্য, সম্প্রতি জেলা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বর্ধমান শহর জুড়ে দেদার বেআইনি নির্মাণ নিয়ে মহকুমা শাসকের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। ভোট ঘোষণার পর এই প্রবণতা আরও বেড়েছে বলে মনে করছে বর্ধমান পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। তাই এ সংক্রান্ত অভিযোগ আসতেই তৎপরতা বাড়ালো পৌরসভা। বন্ধ করে দেওয়া হল নির্মাণ কাজ। জানা গেছে, বর্ধমান শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদরঘাট পুরাতন বাজার এলাকায় সরকারি জমির ওপর দোতলা বাড়ি তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ। সেই খবর পেয়েই বর্ধমান থানার পুলিশ নিয়ে রবিবার দুপুরে অভিযানে যান বর্ধমান পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার। তখন নির্মীয়মাণ বাড়িটির দোতলার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলছিল। পুরপ্রধান সেই কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন। তবে বাড়ির মালিক বিশ্বজিৎ ভকতের দেখা মেলেনি। বর্ধমান পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, একটা অসাধু চক্র বেআইনি নির্মাণে বিশেষভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। পুকুর বুজিয়েও নির্মাণ হচ্ছে বলে অভিযোগ আসছে। তার ওপর এখন দোল উৎসব সহ চারদিন টানা ছুটি। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে চাইছে নির্মাণকারীরা। অভিযোগ পাওয়া মাত্র সেখানে যাচ্ছি আমরা। তিন দিনের মধ্যে জমির মালিকানা, বাড়ি তৈরির প্ল্যান-সহ বাড়ির মালিককে পৌরসভায় দেখা করার নোটিশ জারি করা হচ্ছে। বেআইনি নির্মাণ প্রমাণিত হলে তা ভেঙে ফেলা হবে। তিনি জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই পৌরসভার ৩৫ টি ওয়ার্ডে অবৈধ নির্মাণ সম্পর্কে পৌরসভার চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গঠিত করা হয়েছে ৯ সদস্যের কমিটি। এই কমিটি নজরদারি চালাবে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে। এব্যাপারে বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ জানিয়েছেন, আমরা বিজেপির পক্ষ থেকে পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করতে চাই এই বাড়িটি তৈরি করার অনুমতি কে দিল? যখন বাড়িটি শুরু হল তখনই কেন বন্ধ করা হল না? মৃত্যুঞ্জয়বাবু জানিয়েছেন, ওই বাড়ির পাশের বাড়িটি ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের পুরোনো বাড়ি। তিনি কি পুরোনো বাড়িতে যান না। ওই ওয়ার্ডের যিনি কাউন্সিলার তিনি কি জানেন না ওখানে অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে। কার ইন্ধনে এই নির্মাণ কাজ চলছিল। এটা আমরা বিজেপির পক্ষ থেকে জানতে চাই। আমরা বারবার বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করে এসেছি বর্ধমান শহরে ব্যাঙের ছাতার মত অবৈধ নির্মাণ চলছে। পৌরসভার মদত বা ইন্ধনে। প্রতিটা নির্মাণেই স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের ঘুষ দেওয়া হয়েছে। পৌরসভার কাছে জানতে চাই এই ধরনের সমস্ত ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যারা যুক্ত তাঁদের নাম প্রকাশ করা হোক। অপরদিকে, জেলা কংগ্রেস নেতা গৌরব সমাদ্দার জানিয়েছেন, বর্ধমান পুর এলাকায় বেপরোয়াভাবে তৃণমূল নেতাদের মদতে অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে। তাঁরা স্মারকলিপি দিয়েছেন। এদিনের এই ঘটনায় তাঁদের অভিযোগই সত্য বলে প্রমাণিত হল।
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …