বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- নার্সকে অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসককে মারধর করা হয়েছে। ঘটনায় হাসপাতালে উত্তেজনা ছড়ায়। মারধরে জড়িত যুবককে ধরে চিকিৎসকরা হাসপাতাল ক্যাম্পের পুলিসের হাতে তুলে দেন। পরে, তুষার মণ্ডল নামে এক চিকিৎসক ঘটনার কথা লিখিতভাবে হাসপাতালের সুপারকে জানান। সুপার ঘটনার বিষয়ে বর্ধমান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্বাস্থ্য ভবনে লিখিতভাবে ঘটনার বিষয়টি জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার। বর্ধমান থানার এক অফিসার বলেন, হাসপাতাল থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযুক্ত যুবককে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনমাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বেলা ১টা নাগাদ মঙ্গলকোট থানার ধারসোনার যুবক খন্দেকর সুজাউদ্দিন জরুরি বিভাগের সিবি অর্থপেডিক বিভাগে ঢুকে পড়ে। সে এসে কর্তব্যরত নার্সকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এর প্রতিবাদ করেন ডাঃ তুষার মণ্ডল। প্রতিবাদ করায় তাঁকে মারধর করা হয় এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ও কয়েকজন চিকিৎসক সুজাউদ্দিনকে ধরে হাসপাতাল ক্যাম্পের পুলিসের হাতে তুলে দেন। ঘটনায় হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। এ ধরণের ঘটনা রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে চিকিৎসকদের তরফে।
হাসপাতালে এ ধরণের ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটছে। কিছুদিন আগে রাধারাণি ওয়াের্ড চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা ঘটে। তারও কিছুদিন আগে হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ কৃষ্ণকমল দে রোগীর পরিবারের লোকজনের হাতে নিগৃহীত হন। জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসকও রোগীর পরিজনের হাতে মার খান। মাঝেমধ্যেই এ ধরণের ঘটনা ঘটতে থাকায় নিরাপত্তার দাবিতে সরব হন জুনিয়র ডাক্তাররা। কর্মবিরতিও পালন করেন তাঁরা। হাসপাতালের তরফে নিরাপত্তা জোরদার করার আশ্বাস দেওয়া হয়। হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়ানোও হয়। নিরাপত্তার কারণে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একটি গেট বন্ধ রাখা হয়। ওয়াের্ড যাতে অবাঞ্চিত কেউ ঢুকতে না পারে সে জন্য নিরাপত্তারক্ষীদের কড়া নিের্দশ দেওয়া হয়। তারপরও এ ধরণের ঘটনা ঘটায় হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সুজাউদ্দিন বলে, আমার বাবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর চিকিৎসা নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিলাম। বারবার রক্তের নমুনা নেওয়া হয়। এর কারণ জানতে চাই। সেই সময় জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। মারধরের অভিযোগ ঠিক নয়। হাসপাতালের সুপার ডাঃ উৎপল দাঁ বলেন, এক রোগীর ছেলে ওয়াের্ড ঢুকে চিৎকার-চেঁচামেচি করে। এর প্রতিবাদ করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তখন সে এক জুনিয়র ডাক্তারকে মারধর করে। নার্সকে গালিগালাজ করে। ঘটনার কথা থানায় জানিয়েছি। এছাড়াও প্রশাসনের নানা মহলে বিষয়টি জানিয়েছি।