Breaking News

প্রচার শুরু করলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কীর্তি আজাদ

Trinamool Congress' candidate for Burdwan-Durgapur Lok Sabha constituency Kirti Azad officially started the election campaign.

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বহিরাগত বিতর্ককে মাথায় নিয়েই রবিবার রাত থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমে পড়লেন তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা আসনের প্রার্থী কীর্তি আজাদ। রবিবার ব্রিগেডে তাঁর নাম ঘোষণার পর রাতেই তিনি বর্ধমানে এসে দেখা করেন বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের সঙ্গে। এরপর সোমবার সকালে বর্ধমানে সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রচারে নামলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ। পুজোর পর মন্দিরের বাইরে একটি দেওয়ালে দলীয় প্রতীক আঁকার চেষ্টা করেন তিনি। সেখান থেকে সরাসরি চলে যান বর্ধমানের রাধারানী স্টেডিয়ামে। কার্যত, ক্রিকেটের মাঠ দিয়েই জনসংযোগে নামেন কীর্তি আজাদ। মোট ৪ টি বলে তিনি শট্ নেন। যার মধ্যে একটি মাঠের বাইরে গেলেও বাকি ৩ টি শট ছিল সাদামাটা। রাজনীতির ময়দানে নেমে তিনি আদপেই বিরোধীদের বলকে মাঠের বাইরে পাঠাতে পারেন কিনা নাকি রাজনীতির পিচে জায়গায় জায়গায় তৈরি হওয়া স্পটে বিরোধীদের বল পড়ে গুগলি হয়ে তিনি আউট হবেন কিনা তা ভবিষ্যতই বলবে। উল্লেখ্য, এদিন রাধারাণী স্টেডিয়ামে তৃতীয় ডিভিশন লিগের চৌরঙ্গী ক্লাব বনাম বিধানপল্লী অ্যাথলেটিক ক্লাবের লিগের খেলা চলছিল। কীর্তি আজাদ তারই মাঝে মাঠে আসেন। যা নিয়ে তীব্র বিতর্ক দেখা দিয়েছে। খেলা বন্ধ করে কীভাবে তিনি ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলতে ব্যাট হাতে মাঠে নামলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এদিন কীর্তি আজাদ নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের শরীরচর্চা ও ফিট থাকার বিষয়ে পরামর্শও দেন। সফট ড্রিংকস, পিৎজা, বার্গার-সহ ফাস্ট ফুড বর্জন করে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। বিজেপির বিজেপির জাতীয় মিডিয়া সেলের ইনচার্জ মনোজ মালব্য এক্স হ্যাণ্ডেলের ট্যুইট প্রসঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে কীর্তি আজাদ বলেন, “মিথ্যে অভিযোগ। এই রকম কোনও ঘটনা নেই। কোনও অভিযোগ আছে? এই ধরনের মন্তব্য করায় ওনার লজ্জা হওয়া উচিত। এত নীচ মানসিকতার মানুষ হয় আমার জানা ছিল না।”। উল্লেখ্য, তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতেই বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা জাতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ প্রসঙ্গে বিজেপির জাতীয় মিডিয়া সেলের ইনচার্জ অমিত মালব্যর করা এক্স-হ্যান্ডেল পোস্টের জবাবে এইভাবে নিজের প্রতিক্রিয়া দেন কীর্তি আজাদ। রবিবারই তাঁর এক্স-হ্যান্ডেলে পোস্ট করে অমিত মালব্য জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাগবত ঝা আজাদের ছেলে কীর্তি আজাদকে টিকিট দিয়েছেন, যার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা ভাগলপুরে তাঁর বাড়ি থেকে একটি বাঙালি হিন্দু মেয়েকে অপহরণ করেছিল, ৫০ হাজার বাঙালির দুঃখজনক দেশত্যাগের সূত্রপাত করেছিল, যারা প্রজন্ম ধরে সেখানে বসবাস করেছিলো। পাপরি বোস-রায়কে তার নির্বাচনী এলাকা ভাগলপুরে কীর্তি আজাদের বাবা ভগবত ঝা আজাদের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগী এবং অনুগামীরা অপহরণ করেছিলেন। ভগবত ঝা তখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন কিন্তু বাঙালি মেয়েকে খুঁজে পেতে কিছুই করেননি। উল্টে সে মেয়েটিকে অপহরণকারী ও বাঙালি হিন্দুদের নির্যাতনকারীদের রক্ষা ও সাহায্য করেছিলেন। বাঙালিদের অভিশাপ বিহারের রাজনীতি থেকে আজাদ গোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের যন্ত্রণাদায়ক পুত্রকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেন। তার উপর লজ্জা। এটি তাই সন্দেশখালীতে হিন্দুদের নির্যাতনকারী শেখ শাহজাহানকে রক্ষা করার মতো। অন্যদিকে, কীর্তি আজাদের ওপর বহিরাগত তকমা নিয়ে সরাসরি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলে দিয়েছে বাংলা পক্ষ। বাংলা পক্ষের শীর্ষ কমিটির সদস্য করবী রায় জানিয়েছেন, বিজেপি তাঁদের ঘোষিত শত্রু। তাই তাদের বহিরাগত প্রার্থী নিয়ে তাঁদের কিছু যায় আসেনা। কিন্তু যাদের বাংলা পক্ষ বাংলার পার্টি বলে মনে করে সেই তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএম এবং কংগ্রেসের কাউকে অবাঙালি প্রার্থী করা হলে তাঁরা জনগণের কাছে আবেদন রাখছেন তাঁদের পরাস্ত করুন। কীর্তি আজাদ, ইউসুফ পাঠান এবং শত্রুঘ্ন সিনহাকে ভোট না দেবার তাঁরা আবেদন করেছেন। তাঁরা চান প্রার্থী বাঙালি হোক। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যেই বাংলা পক্ষে সোস‌্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছে, তৃণমূলের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী – কীর্তি আজাদ, শত্রুঘ্ন সিনহা, ইউসুফ পাঠান -দের পরাজয়-ই হবে বাঙালির জয়। বহরমপুর, আসানসোল, বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে যদি সিপিআইএম বা কংগ্রেসের বাঙালি প্রার্থী দেওয়ার হয়,তাদের বিপুল সংখ্যক ভোটে নির্বাচিত করুন। পবন হোক বা কীর্তি আজাদ কিংবা শত্রুঘ্ন; অর্জুন হোক বা ফিরহাদ কিংবা ভিবেক; ফুয়াদ হোক বা সায়রা, জিতেন, পাঠান; একটাই মিল…বহিরাগত! বহিরাগত! বহিরাগত! তাঁরা বলেছেন, বাংলায় বাঙালি মুসলমান নেই? ইউসুফ পাঠানকে এনেছে তৃণমূল। লজ্জাজনক ইউসুফ পাঠানকে হারাও বাঙালি। ধিক্কার তৃণমূলকে। বাংলার মাটিতে নানা লোকসভা কেন্দ্রে বহিরাগত প্রার্থী দেওয়ার চল শুরু হয়েছে। বহিরাগত প্রার্থীদের বর্জন করো বাঙালি। কীর্তি আজাদ শত্রুঘ্ন সিনহা ইউসুফ পাঠান কোনো বহিরাগত প্রার্থী চাই না। জয় বাংলা। উল্লেখ্য, এদিন বর্ধমান টাউন হলে কর্মী সম্মেলনও করেন প্রার্থী। যদিও অনেকের কাছেই এই মিটিংয়ের খবর না থাকায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্বরা।

About admin

Check Also

Doctor Birupaksha Biswas was transferred to Kakdwip a year ago, did not go

এক বছর আগেই কাকদ্বীপে বদলি করা হয় চিকিৎসক বিরূপাক্ষকে, যাননি; ক্যান্টিন মালিক আইনের পথে

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বিতর্কিত চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে এক বছর আগেই স্বাস্থ্য দপ্তর বদলির নির্দেশ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *