বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- রাজ্যপালের কার্টুন আঁকা প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভে সামিল হল ওয়েবকুপার পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটি, বর্ধমান ইউনিভার্সিটি কর্মচারী সমিতি এবং সাধারণ ছাত্র ছাত্রীবৃন্দ। শনিবার সকালে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিল বর্ধমানের রাজবাটি ক্যাম্পাস এলাকায়। বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় রাজ্যপাল গেট আউট, রাজ্যপাল গো ব্যাক স্লোগানও। সম্প্রতি রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলিকে “মিনি সন্দেশখালি” এবং “ক্যাম্পাসে গুন্ডারাজ” বলার পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী, অধ্যাপক, ছাত্র নেতৃত্ব। এদিন তাঁরা জানিয়েছেন, রাজ্যপালের এই বক্তব্য আদতে অধ্যাপক-গবেষক-ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষাকর্মীদের গুন্ডা বলে অভিহিত করে অপমান করা। তাঁরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। শনিবার সকালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজবাটী ক্যাম্পাসের গেটের সামনে রাজ্যপালের কার্টুন আঁকা প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পাশাপাশি রাজ্যপাল গেট আউট, রাজ্যপাল গো ব্যাক স্লোগান দেওয়া হয়। প্রায় ৩০ মিনিট চলে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি। বর্ধমান ইউনিভার্সিটি কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শ্যামাপ্রসাদ ব্যানার্জি জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল অগণতান্ত্রিক প্রদ্ধতিতে আঘাত হানার চেষ্টা করছেন, অসাংবিধানিকভাবে রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজে হস্তক্ষেপ করেছেন। সর্বোপরি রাজ্যের নির্বাচিত শিক্ষামন্ত্রী সম্পর্কেও বিভিন্ন ধরনের বিষোদগার করছেন। এর প্রতিবাদে তাঁরা যারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কলেজের অধ্যাপক, ওয়েবকুপার সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী এবং ছাত্র সমাজ প্রকাশ্যে রাজপথে নেমে প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন। তাঁরা রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে বার্তা দিতে চাইছেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় রাজ্যপাল নিশ্চিতভাবে জানেন সংবিধান তাঁকে কতটা ক্ষমতা দিয়েছে। সেই ক্ষমতার থেকে পেরিয়ে এসে তিনি যেভাবে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে জমিদারি প্রথায়, তুঘলকি প্রথায় স্বৈরাচারী শাসনের মধ্যে দিয়ে পরিচালনা করার চেষ্টা করছেন তার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁরা এই বার্তা পৌঁছে দিতে চাইছেন বাংলায় একটি গণতান্ত্রিক সরকার চলছে। সেই সরকারের বিভিন্ন কাজকর্মের উপরে যেভাবে কেন্দ্রীয় সরকার প্রেরিত রাজ্যপাল হস্তক্ষেপ করে রাজ্যের বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমুখী কাজ, রাজ্যের মেধা তৈরির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর অনবরত আক্রমণ নামিয়ে আনছেন। এটা বাংলার মানুষ মানবেন না। আজ তাঁরা রাস্তায় নেমেছেন। আগামী দিনে আরও বড় আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে তাঁরা রাজ্যপালকে বুঝিয়ে দেবেন প্রতিবাদী বাংলায় তুঘলকি শাসন চলবে না। জমিদারি প্রথা চলবে না। তাই আজকেই আওয়াজ উঠেছে এই তুঘলকি, স্বৈরাচারী রাজ্যপালকে এই রাজ্য থেকে তাড়িয়ে দিতে চাই। বাংলার মানুষকে নিয়েই তাঁরা সেই কাজ করবেন। এদিন অধ্যাপক তারকনাথ মণ্ডল জানিয়েছেন, রাজ্যপাল বলে বেড়াচ্ছেন প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয় একটা করে মিনি সন্দেশখালি তৈরি হয়েছে। এই তথ্য তিনি কোথা থেকে পাচ্ছেন? এরজন্য তিনি নাকি বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন। নির্দেশিকা জারি করেছেন। এটা গণতন্ত্রের উপর আঘাত। আমরা শিক্ষক সমাজ এটা মেনে নেবো না। জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি স্বরাজ ঘোষ জানিয়েছেন, রাজ্যপাল স্বৈরাচারী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নষ্ট করে দেওয়াই তাঁর লক্ষ্য। শিক্ষামন্ত্রীকে অপমান করেছেন। এরই প্রতিবাদে আজ যৌথভাবে আন্দোলন করা হয়েছে। রাজ্যপাল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে কাজ করছেন। আমরা বলছি রাজ্যপাল গেট আউট। তিনি তো কার্টুন। শিক্ষা ব্যবস্থাকে তিনি কার্টুন নেটওয়ার্ক করে দিয়েছেন।
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …