বর্ধমান, ১৯ জানুয়ারিঃ-বেড়াতে গিয়ে দীঘার হোটেলে জামালপুরের এক ব্যক্তির খুন হওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক মহিলা ও তার আত্মীয়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে বর্ধমান শহরের কার্জন গেট এলাকা থেকে বর্ধমান থানার পুলিশ দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে ধৃতদের দীঘা থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রাতেই বর্ধমান থানায় দু’জনকে দীর্ঘক্ষণ জেরা করে দীঘা থানার পুলিশ। পরে ধৃতদের নিয়ে পুলিশ কল্যানীতে যায়। সেখানে কয়েক জায়গায় হানার পর ধৃতদের নিয়ে দীঘার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় পুলিশ। ধৃতদের নাম সোমা কোলে ওরফে টুসি এবং শৈলেশ কোলে। প্রথম জনের বাড়ি জামালপুর থানার নুড়ি মোড় এলাকায়। অপর জনের বাড়ি জামালপুর থানারই ফইমপুরে। খুনের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করলেও এখনও মূল অভিযুক্ত ধরা পড়েনি। নদীয়ার কল্যাণী কিংবা বিহারের গয়ায় সে গা-ঢাকা দিয়েছে বলে পুলিশের অনুমান।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১ ডিসেম্বর নুড়ি গ্রামের আবদুল কালাম আলি তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকা গ্রামেরই রীতা বিশ্বাসের সঙ্গে বেড়াতে যায়। সেখানে দু’জনে নিউ দীঘার একটি গেস্ট হাউসে ওঠে। গেস্ট হাউসের খাতায় রীতার নাম পরিবর্তন করে আনিশা বেগম লেখা হয়। ২ ডিসেম্বর সকালে গেস্ট হাউসের এক কর্মী চা দিতে গিয়ে ভেজানো দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকে কামালকে গুরুতর জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। পরে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সেখানেই তিনি মারা যান। তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধরের চিহ্ন ছিল। মারা যাওয়ার আগে চারজন মিলে তাঁকে পিটিয়ে মেরেছে বলে পুলিশকে জানান কালাম। গেস্ট হাউসের ঘর থেকে চারটি রক্ত মাখা রডও উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, গেস্ট হাউসের রেজিষ্টারে থাকা মহিলার নামটি আসলে মৃতের স্ত্রীর। কিন্তু, ঘটনার দিন তিনি যে দীঘায় জাননি তা পুলিশকে সাফ জানিয়ে দেন মৃতের স্ত্রী। ঘটনার সময় রীতা বাড়িতে ছিলনা। সে দীঘায় গিয়েছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানতে পারে পুলিশ। বিষয়টি জানাজানি হতেই সে গা-ঢাকা দেয়। তবে, দিদি সোমার সঙ্গে রীতার নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ ছিল। নজরদারি চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে, সোমা এবং তার আত্মীয় বর্ধমানে এসেছে। বিষয়টি জানতে পেরে দু’জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মীর্জা বলেন, দীঘার একটি খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বর্ধমান থেকে এক মহিলা সহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গিয়েছে সেখানকার পুলিশ। যৌথ তল্লাশিতে বর্ধমান এবং দীঘা থানার পুলিশ তাদের ধরেছে।