রায়না ও বর্ধমান, ৩১ জানুয়ারিঃ- রায়নার সিপিএমের জোনাল কমিটির সদস্য তথা এলাকার প্রভাবশালী নেতা শেখ কওসর আলির বাড়ি লাগোয়া মজে যাওয়া ডোবা থেকে পুলিশ উদ্ধার করল আরও আগ্নেয়াস্ত্র ও কারতুজ। বৃহস্পতিবার সকালেই মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অম্লানকুসুম ঘোষের নেতৃত্বে রায়নার ওসি রাকেশ সিং সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ রায়না থানার পোলেমপুরে কওসর আলির বাড়ি ঘিরে ফেলে। পরে তল্লাশি চালানো হয় তার বাড়ি সহ বাড়ি লাগোয়া ডোবাটিতে। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় একটি বস্তায় জড়ানো দু’টি ৯ এম এম পিস্তল, দু’টি কার্বাইন এবং ২০ টি কারতুজ। উল্লেখ্য, গত ২৪ জানুয়ারি গভীর রাত্রে পুলিশ কওসের আলির বাড়ি ঘেরাও করে। পরে ২৫ জানুয়ারি ভোরে বাড়ি থেকে পুলিশ কওসের আলি এবং তাঁর সঙ্গী আলাউদ্দিন কাজীকে গ্রেপ্তার করে। ওইদিনই পুলিশ কওসের আলির বাড়ি থেকে উদ্ধার করে একটি ৯ এম এম পিস্তল, আধুনিক মানের একটি কার্বাইন, ৩৭ রাউন্ড কারতুজ এবং ৩ টি ম্যাগাজিন। বাড়ির বিছানার নিচে একটি বাক্স থেকে এগুলি উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশ আরও অস্ত্র উদ্ধারের যুক্তি দেখিয়ে ওই সিপিএম নেতাকে ১৪ দিনের পুলিশ হেপাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় আদালতে। আদালত ৭ দিনের পুলিশ হেপাজত মঞ্জুর করে। আগামীকাল শুক্রবার ফের তাঁদের আদালতে পেশ করার কথা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফের কওসর আলিকে তাঁদের হেপাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হতে পারে। ইতিমধ্যেই পুলিশ আদালতে পেশ করা রিপোর্টে জানিয়েছে, ধৃত সিপিএম নেতা কওসর আলি অস্ত্র সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত। সম্প্রতি রায়নার বাঁধগাছা থেকে গ্রেপ্তার করে তৃণমূল নেতা নিয়ামল হক মণ্ডলকে । নিয়ামল হক মণ্ডলকে গ্রেপ্তারের পর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই পুলিশ জানতে পারে দক্ষিণ দামোদরের সাম্প্রতিক কালের রাজনৈতিক হিংসার পিছনে রয়েছে এই কওসর আলির হাত। তাঁর কাছ থেকেই তৃণমূল নেতা নিয়ামল হক মণ্ডলদের অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে। পুলিশের দাবী, নিয়ামল হক মণ্ডলকে জেরা করেই পুলিশ কওসর আলির নাম জানতে পারে। এরপরেই গ্রেপ্তার করা হয় কওসর আলিকে। এদিকে, কওসর আলিকে গ্রেপ্তারের পরেই গোটা বিষয়টিকে সাজানো ষড়যন্ত্র বলে দাবী করেন ধৃতের স্ত্রী মধুমিতা কোনার সহ সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদারও। তাঁরা দাবী করেন, ২৫ জানুয়ারি রীতিমত পরিকল্পনা মাফিক কওসর আলির ঘরে অস্ত্র সাজিয়ে রেখেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজও রাতের অন্ধকারে পুলিশ ডোবায় অস্ত্র লুকিয়ে রেখে সেই অস্ত্রই পুলিশ উদ্ধার দেখিয়েছে। এদিকে, ফের বৃহস্পতিবার সকালে কওসর আলির বাড়ি লাগোয়া ডোবা থেকে নতুন করে অস্ত্র উদ্ধারের পর গোটা এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলির মধ্যে পিস্তল গুলির দাম প্রায় ৪০ হাজার টাকা করে এবং কারবাইন গুলির দাম ১ লক্ষ টাকা করে। কওসের আলিকে গ্রেপ্তার করা এবং পুলিশ অস্ত্র উদ্ধারের পর গোটা দক্ষিণ দামোদর এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস শিবিরে খুশির হাওয়া রয়েছে। কারণ আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সিপিএমের এই দুঁদে নেতার যে মুক্তি সম্ভব নয় তা বুঝতে পারার পরই খুশির হাওয়া বইতে শুরু করেছে। তৃণমূল নেতা অশোক সাঁতরা জানিয়েছেন, কওসর আলি এলাকার ত্রাস ছিলেন। এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম কান্ডে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ উঠেছিল। ফলে তাঁকে গ্রেপ্তার এবং তাঁর কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ নিরপেক্ষ কাজ করেছে। পাশাপাশি অশোক বাবু আরও জানিয়েছেন, কওসরের এই অস্ত্র আমদানির বিষয় নিয়ে পুলিশ ঠিকমত তদন্ত করলে সিপিএম নেতাদের সাথে কয়লা মাফিয়াদের যোগসাযোগের বিষয়টিও বেড়িয়ে আসবে। কয়লা মাফিয়াদের কাছ থেকেও সিপিএমের কাছে অস্ত্র আসত। কওসরের কাছেও এসেছিল।
Tags 9 mm Pistol All India Trinamool Congress Ammunition arms Arms Recover Arms Recovered Arrest Arrested Barddhaman Bardhaman Bôrdhoman Burdwan Chief Judicial Magistrate CJM Coal Coal Mafia Communist Party Communist Party Of India Communist Party Of India ( Marxist) Court CPI(M) CPM Custody Fire Arms Firearms Firearms & Ammunition Firing Gun Karbain Machine Gun Mafia Marxist Nandigram Nandigram Firing Pistol police Police Custod Political Politics Raina Raina Police Station Stain Gun Staingun tmc Trinamool Congress West Bengal
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …