Breaking News

বর্ধমান থেকে রেলের ভুয়ো চাকরি চক্রের পান্ডাকে গ্রেপ্তার করল হাওড়া কমিশনারেটের গোয়েন্দা দপ্তর

Fake Railway Recruitment-er name pratarana korar abhijok-a Burdw
বর্ধমান থেকে ধৃত তারকনাথ রায়

বর্ধমান, ১৯ মার্চঃ- রেলের ভুয়ো নিয়োগপত্র বিলি করে বেকার ছেলে-মেয়েদের কাছ থেকে কয়েককোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের এক চাঁইকে বর্ধমান থেকে গ্রেপ্তার করল হাওড়া কমিশনারেটের গোয়েন্দা দপ্তর। গত রবিবার হাওড়া স্টেশনের কাছে জি আর রোড থেকে সন্দীপ শর্মা নামে প্রতারণা চক্রের এক পান্ডাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা দপ্তর। ধৃতকে হাওড়া আদালতে পেশ করে ১৪ দিন পুলিশি হেপাজতে নেয় কমিশনারেটের গোয়েন্দা দপ্তর। মঙ্গলবার দুপুরে সন্দীপকে নিয়েই সাব ইনস্পেকটর মহম্মদ সাহেদ-এর নেতৃত্বে ৪ জনের গোয়েন্দা টিম বর্ধমান শহরের কানাইনাটশাল ইন্দ্রকানন এলাকায় তারকনাথ রায়ের বাড়িতে হানা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে বর্ধমান থানায় আনা হয়। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ধৃতকে নিয়ে হাওড়ার উদ্দেশে রওনা দেয় গোয়েন্দা দলটি। তারককে গ্রেপ্তার করতে অবশ্য বিশেষ বেগ পেতে হয়নি। দরজায় কড়া নাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সে বেড়িয়ে আসে। গাড়িতে বসে থাকা সন্দীপ শনাক্ত করামাত্র গোয়েন্দারা তাকে গ্রেপ্তার করে। জেরায় সে প্রতারণাচক্রে জড়িত থাকার কথা কবুল করেছে বলে গোয়েন্দাদের দাবি। বুধবার ধৃতকে হাওড়া আদালতে তুলে হেপাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হবে বলে সি আই ডি সূত্রে জানা গিয়েছে। রেলে চাকরির প্রতারণাচক্রে তারকের জড়িত থাকার বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় ইন্দ্রকানন এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বেকার ছেলে-মেয়েরা মাঝে মধ্যেই তার বাড়িতে আসত স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। মাঝে মধ্যেই গাড়িতে বাইরে থেকে লোকজনও তার বাড়িতে আসে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। বর্ধমান থানার আই সি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, হাওড়া গোলাবাড়ি থানার একটি প্রতারণার মামলায় কানাইনাটশালে ইন্দ্রকানন থেকে এক জনকে সেখানকার গোয়েন্দা দপ্তর গ্রেপ্তার করেছে। ধৃত যুবক রেলে চাকরি করে দেওয়ার নামে বহু জনকে ঠকিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।Fake Railway Recruitment-er name pratarana korar abhijok-a Burdw

          জেলা পুলিশ এবং গোয়েন্দা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মধ্যে প্রদেশের যুবক অমিত সিং গোলাবাড়ি থানায় প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি জানান, লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে রেলে চাকরি করে দেওয়ার নামে বেকার যুবক-যুবতীদের প্রতারণা করেছে একটি চক্র। চক্রটির খপ্পরে পড়ে তিনিও প্রতারিত হয়েছেন। প্রতারণা চক্রটির বিষয়ে তিনিই প্রাথমিক তথ্য দেন পুলিশকে। তাঁর দেওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করেই বিহারের আরা জেলার বাসিন্দা সন্দীপকে গ্রেপ্তার করে হাওড়া কমিশনারেটের গোয়েন্দারা। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে রেলের জাল হাজিরা খাতা, রেলের পদস্থ কর্তাদের শিলমোহর দেওয়া শংসাপত্র, নকল নিয়োগপত্র, ব্যাঙ্কের পাশবই এবং এটিএম কার্ড, রেলের রাবার স্ট্যাম্প প্রভৃতি বাজেয়াপ্ত করে গোয়েন্দা দপ্তর। প্রার্থী পিছু ৬ লক্ষ টাকা নেয় প্রতারকরা। পুরো টাকা মেলার পরই দেওয়া হত নিয়োগপত্র। তারপর বিভিন্ন জায়গায় প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণ শেষে পোস্টিং। বিভিন্ন স্টেশনে কাজ করানো হত। মাস শেষে বেতনও দেওয়া হত। মাস তিনেক বেতন দেওয়ার পর নানা অছিলায় ছাঁটাই করা হত জাল নিয়োগপত্র পাওয়াদের। শুধু এই রাজ্যেই নয়, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এমনকি দিল্লীতেও চক্রটি সক্রিয় বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। এইভাবে প্রতারণা করে ২০ কোটি টাকার মতো হাতিয়েছে প্রতারকরা বলে জানতে পেরেছে তদন্তকারী সংস্থা।

About admin

Check Also

The fifth short film festival was organized in Burdwan

বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *