বর্ধমান, ১৬ আগষ্টঃ- পুরসভা ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হতেই বর্ধমানে চমক দেখাল বিজেপি। বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেস যখন তাঁদের প্রার্থী তালিকা এখনও প্রকাশ করতেই পারেনি, তখন এই রাজ্যে দূর্বল রাজনৈতিক দল হিসাবে পরিচিত বিজেপি-র ৬ জন প্রার্থী প্রথম দিনই মনোনয়ন পত্র জমা দিল।
আসন্ন পুরভোটে ৯ জেলার ১২ টি পুরসভার মধ্যে বর্ধমান জেলার বর্ধমান এবং গুশকরা পৌরসভায় ভোট হবে। আজ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মনোনয়ন পত্র জমা ১৬ আগষ্ট থেকে ২৩ আগষ্ট পর্যন্ত চলবে। নিরীক্ষণ হবে ২৪ আগষ্ট, প্রত্যাহার ২৬ আগষ্ট। ভোটের দিন ঠিক করা হয়েছে ২১ সেপ্টেম্বর। কোনও দলই এখনও পর্যন্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি। তবে বিজেপি প্রার্থী তালিকা ঘোষোণা না করলেও, বর্ধমান পুরসভার জন্য আজ বিজেপির ৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দেন। বিজেপির জেলা সম্পাদক সন্দীপ নন্দী জানিয়েছেন, বর্ধমান পৌরসভার ৩৫ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৫ টি ওয়ার্ডের প্রার্থী ঠিক হয়ে গেছে, গুশকরার ১৬ টি ওয়ার্ডের মধ্যে প্রার্থী ঠিক হয়েছে ১২ টি ওয়ার্ডের। তবে প্রার্থীদের নিরাপত্তা এবং ভয় দেখিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস যাতে প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত না করতে পারে তাই এখনই ঠিক হয়ে যাওয়া প্রার্থীদের নাম জানান যাবে না বলে জানান সন্দীপ বাবু।
কংগ্রেস জেলা সভাপতি আজিজুল হক মন্ডলও সন্দীপ বাবুর মতো একই সুরে জানিয়েছেন, বর্ধমানের ৩৫ টি এবং গুশকরার ১৬ টি প্রার্থীই ঠিক হয়ে গেছে। কিন্তু, প্রার্থীদের নিরাপত্তা এবং কেও ভয় দেখিয়ে যাতে প্রার্থীদের সরিয়ে নিতে না পারে তাই এখনই তালিকা ঘোষণা করা হবে না। সোমবার থেকে কংগ্রেস মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া শুরু করবে বলে জানান আজিজুল বাবু। একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমানের মৃত তিন কংগ্রেস নেতা সাধন ঘোষ, চম্পক গড়াই এবং হিমাংশু রায়ের স্ত্রী যথাক্রমে শ্রীলেখা ঘোষ, জোৎস্না গড়াই এবং কল্যাণী রায়কে এবার প্রার্থী করতে চলেছে কংগ্রেস। এছাড়া কংগ্রেসের প্রার্থী হতে পারেন, জেলা সভানেত্রী সবিতা দাস, আই এন টি ইউ সি নেতা রণজিৎ শীল, তিন জেলা সম্পাদক কৈলাস পাসোয়ান, মনোয়ার আজম, সেখ সানু সহ অধ্যাপক সুদীপ মজুমদার।
তৃণমূল কংগ্রেস এখনও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না করার পিছনে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বই মূল কারণ হিসাবে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এবার তৃণমূলের টিকিট কেকে পাচ্ছে শেষ ৭ দিন শহরে মূল আলোচনার বিষয় এটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে । কলকাতায় বর্ধমানের তিন মন্ত্রী এবং বিধায়ক সহ বেশ কয়েকজন নেতা টানা কয়েকদিন ধরে প্রার্থী তালিকা নিয়ে মিটিং করেও চরম গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের কারণেই তা এখনও ফাইনাল হয়নি বলে সূত্রের খবর। সমাধান সূত্র খুঁজতে মমতা ব্যানার্জীর নজরে বিষয়টি আনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে একটি সূত্রে জানা গিয়েছে বর্ধমান পৌরসভার ২০০৮ সালে জয় পাওয়া ৫ জন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীই এবারও টিকিট পাচ্ছে। টিকিট পাচ্ছে ২০০৮ সালে গুশকরার জয় পাওয়া প্রার্থীরাও।
বামফ্রন্ট কৌশল গত কারণে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ না করলেও আজ থেকে প্রচারে নেমে গেছে। রাজ্যে ক্ষমতায় থাকা দল সহ অন্যান্য দল প্রচার শুরু না করলেও বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে ব্যানার, ফ্লেক্স লাগান শুরু হয়েছে। মনে করা হচ্ছে রাজ্যের অন্য দুই বিরোধী দলের মত বামফ্রন্টও প্রার্থীদের নিরাপত্তা এবং কেও ভয় দেখিয়ে প্রার্থীদের অনিচ্ছুক করতে যাতে না পারে তাই প্রার্থী তালিকা এখনও ঘোষণা করেনি।