বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি হওয়ার ১০ বছর পরও দুই অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করতে পারেনি বর্ধমান থানার পুলিশ। পরওয়ানা কার্যকর করার জন্য বারবার পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পুলিশ দুই অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করতে না পারায় ঘটনার ১১ বছর পরও মামলার বিচার শুরু হয়নি। অন্য দুই অভিযুক্ত অবশ্য নিয়মিত আদালতে হাজির হচ্ছে। শেষমেশ পলাতক দুই অভিযুক্তের সম্পত্তি ক্রোক করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বর্ধমান সিজেএম আদালত। এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের জামিনদার বর্ধমান আদালতের ল’ক্লার্ক সুশান্ত মণ্ডলকে অবহিত করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান থানার কাষ্ঠকুরুম্বায় একটি রাইস মিলে কাজ করতেন খোকন বাউড়ি (৩৬)। ২০০৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাতে অসিত হাজরা ওরফে বাপির পোলট্রি ফার্মে আরও কয়েকজনের সঙ্গে মদের আসরে যোগ দেয় খোকন। রাত ১১টা নাগাদ পোলট্রি ফার্মে অবৈধভাবে সংযোগ নেওয়া বিদ্যুতের তারে শক খেয়ে মারা যান খোকন। তা দেখতে পায় তার সঙ্গীরা। অসিত বিষয়টি প্রথম দেখতে পায়। সে ঘটনার কথা অন্যদের জানায়। তার পোলট্রি খামারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে খোকনের মৃত্যুর কথা কাউকে না জানানোর জন্য অসিত অন্যদের বলে। ঘটনার কথা কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় অসিত। এরপর অসিতের নির্দেশে খোকনের সঙ্গীরা তার মৃতদেহ ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে নয়ানজুলিতে ফেলে আসে। পরেরদিন সকালে তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। খোকনের দাদা প্যাংলা বাউড়ি ঘটনার বিষয়ে পুলিসে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর ধারায় মামলা রুজু করে অসিত, তার ছেলে শান্তনু হাজরা, রাইস মিলের শ্রমিক অনাথ হাজরা ও কালিয়া সামন্ত রায়কে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তদন্ত সম্পূর্ণ করে ২০০৮ সালের ৩১ মার্চ তদন্তকারী অফিসার অলোক কুমার মিত্র ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেন। এফআইআরে নাম থাকা ৫ জনের নাম চার্জশিট থেকে বাদ পড়ে। পরে অভিযুক্তরা জামিন পায়। জামিন পাওয়ার পর অসিত ও শান্তনু আদালতে নিয়মিত হাজির হলেও অনাথ ও কালিয়া পালিয়ে যায়। ২০০৮ সালে ২৮ ডিসেম্বর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি করে আদালত। পরওয়ানা কার্যকর করার জন্য আইসিকে ব্যবস্থা নিতে বলে আদালত। এমনকি ডিআইজি বর্ধমান রেঞ্জকে জানানোর হুঁশিয়ারিও দেয় আদালত। পুলিশ আদালতে জানায়, পরওয়ানা কার্যকর করতে বেশ কয়েকবার কাষ্ঠকুরুম্বায় গিয়েও দুই পলাতক অভিযুক্তের হদিশ মেলেনি। এমনকি তাদের এলাকায় না থাকার বিষয়ে পঞ্চায়েত প্রধানের শংসাপত্রও আদালতে পেশ করে পুলিশ। এরপরই দুই অভিযুক্তের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
Tags Bardhaman Burdwan East Bardhaman East Burdwan Electricity property attachment Purba Bardhaman unlawful পূর্ব বর্ধমান বর্ধমান হুকিং
Check Also
বর্ধমান টাউন হলে শুরু হলো লিটল ম্যাগাজিন মেলা, চলবে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- শুক্রবার থেকে শুরু হলো ‘বর্ধমান লিটল ম্যাগাজিন মেলা ২০২৪’। বর্ধমান টাউন …