বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান ক্রিকেট প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন হল বর্ধমান বিগ বস। রবিবার বর্ধমানের বাম মাঠে ফাইনাল খেলায় বর্ধমান বিগ বস ৫ উইকেটে বর্ধমান গ্ল্যাডিয়েটরসকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। বর্ধমান প্রিমিয়ার লিগের সভাপতি সুধীররঞ্জন সাউ এবং সাধারণ সম্পাদক সুমিত মিত্র জানিয়েছেন, টসে জিতে বর্ধমান গ্লাডিয়েটরস ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে তারা ১১৫ রান করে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন সুমন রজক। এছাড়াও স্বর্ণাদিত্য মান্ডি ২৪ রান করেন। বিগ বসের হয়ে হৃতিক সরকার ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে ৩ টি উইকেট নেন। এছাড়াও অর্ণব ঘোষ ও শুভম বিশ্বাস ১ টি করে উইকেট নেন। এরপর ব্যাট করতে নেমে বিগ বস ১৮.৩ ওভারে ৫ উইকেটে ১১৯ রান তুলে ম্যাচ জিতে নেয়। স্বপ্নদীপ মল্লিক ৩৭ ও পরমজিৎ সিং ২৪ রান করে দলকে জেতাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন। গ্ল্যাডিয়েটরের পার্থ চৌধুরী ৩৫ রান দিয়ে ২ টি ও সমৃদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায় ৯ রান দিয়ে ১ টি উইকেট নেন। ফাইনাল ম্যাচের শেষে উভয় দলকে ট্রফি ও আর্থিক পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয়। টুর্নামেন্টে সেরা বোলার শুভম বিশ্বাস। সেরা ব্যাটসম্যান নির্বাচিত হন সুমন রজক। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন বিগ বসের স্বপ্নদীপ মল্লিক। ফাইনালে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ সুরেন্দ্রজিত সিংহ অহলুবালিয়াকে। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন রঞ্জি ট্রফি ক্রিকেটার গীতিময় বসু, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্তমান রঞ্জি ক্রিকেটার অলোকপ্রপাত সিং, ঝাড়খন্ড রাজ্য দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার সঞ্জীব সিং।
উল্লেখ্য, ২ নভেম্বর থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত এই প্রিমিয়ার লিগের আসর বসেছিল বর্ধমানের বাম ক্রিকেট ময়দানে। বর্ধমান শহরের প্রাক্তন ক্রিকেট খেলোয়াড়দের নিয়ে তৈরী হয় একটি কার্য্যকরী কমিটি। সুধীররঞ্জন সাউ জানিয়েছেন, চলতি সময়ে গোটা বর্ধমান জেলা জুড়ে ক্রিকেটে অবনমন ঘটেছে। গোটা জেলার সমস্ত প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের তুলে ধরার লক্ষ্য নিয়েই তাঁরা কলকাতার ধাঁচে এই প্রিমিয়ার লিগ জেলায় প্রথম শুরু করলেন। সুধীরবাবু জানিয়েছেন, মোট ৪টি টিম ছিল এই লিগে। সেগুলি হল বর্ধমান সুপার কিংস, বর্ধমান এলিটস্, বর্ধমান গ্লাডিয়েটরস্ এবং বর্ধমান বিগ বস্। সিএবি-র নিয়মানুসারেই খেলা হয়। প্রতিটি দলে ছিল বাধ্যতামূলকভাবে অনুর্ধ ১৬ ও অনুর্ধ ১৯-এর দুজন করে খেলোয়াড়। ডিউস বলে খেলা হয়। এদিকে, রবিবার ফাইনাল খেলায় বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ তথা বিজেপি নেতা সুরেন্দ্রজিত সিংহ অহলুবালিয়াকে আমন্ত্রণ জানানোকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। অভিযোগ, দুপুর থেকেই এলাকার তৃণমূল নেতা কর্মীরা মাঠে লোক জমায়েত করতে শুরু করেন। ছিল মহিলা বাহিনীও। দফায় দফায় এদিন তৃণমূল নেতারা উদ্যোক্তাদের হুঁশিয়ারী দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, তৃণমূল নেতারা জানান, বিজেপি সাংসদ মাঠে আসলে ঝামেলা বাধবেই। পণ্ড হবে খেলা। কার্যত এদিন দুপুর থেকেই এই ঘটনায় শুরু হয় উত্তেজনা। ঝামেলার আগাম এই খবরে দুপুর থেকেই খেলার মাঠে মজুদ করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনীকে। নিয়ে আসা হয় রেপিড অ্যাকশন ফোর্সকেও। দুপুর আড়াইটে নাগাদ সাংসদের আসার কথা থাকলেও তিনি মাঠে আসেন বিকাল ৪টে নাগাদ। জানা গেছে, এদিন এই ঘটনায় সাংসদকে মাঠে না যাওয়ার জন্যও বিজেপির কিছু নেতা পরামর্শ দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি মাঠে যান এবং খেলায়াড়দের হাতে পুরষ্কারও তুলে দেন। যদিও প্রচুর পুলিশ মোতায়েন থাকায় কোনোরকম অশান্তি হয়নি। যদিও বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের শাসক দলের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে খেলার মাঠে সাংসদ আসাকে কেন্দ্র করে কোনও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরী করা হয়নি। তবে খেলার মাঠে যাতে কোনও রাজনীতি না হয় এ বিষয়ে বেশ কিছু ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ সরব হয়েছেন -এই খবর তাঁদের কাছে এসেছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেঞ্জিত দাস।
প্রতিবেদক – গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিপুন ভট্টাচার্য