Breaking News

চিকিৎসায় গাফিলতিতে গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ, ক্ষতিপূরণ দাবি করে রাজ্য ক্রেতা আদালতে মামলা

গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- গৃহবধূর মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ এনে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক, সুপার, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও জেলা কালেক্টরের কাছে ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে আসানসোলে রাজ্য ক্রেতা আদালতের সার্কিট বেঞ্চে মামলা করল মৃতার স্বামী ও ৭ বছরের মেয়ে। এছাড়াও মামলা চালানোর খরচ বাবদ আরও ২০ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছে। মামলাটি ক্রেতা আদালত গ্রহণ করেছে। এটি ক্রেতা আদালতের বিচারক কমল দে মামলাটি গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আবেদনের কপি ও নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২৪ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। সেদিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন ক্রেতা আদালতের বিচারক। মামলাকারীদের আইনজীবী শান্তিরঞ্জন হাজরা বলেন, মাত্র ৩২ বছর বয়সে স্বামী তার জীবনসঙ্গিনীকে হারিয়েছেন। আর ৭ বছর বয়সে মেয়ে হারিয়েছে তার মাকে। সারাজীবন মাহারা হয়ে থাকতে হবে মেয়েটিকে। দু’জনের কাছেই বিষয়টি অত্যন্ত কষ্টের এবং মানসিক উদ্বেগের। চিকিৎসকদের গাফিলতিতে গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। সে কারণে ২৫ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। সরকারি হাসপাতালে বিনা পয়সায় চিকিৎসা হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসার জন্য রোগীকে পয়সা দিতে হয়। সে কারণে হাসপাতালও ক্রেতা আদালতের বিচারে এক্তিয়ারের মধ্যে পড়বে। মামলাটি গ্রহণ করার মতো রসদ নথিতে রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের উল্লেখ করে মামলাটি গ্রহণ করেছে ক্রেতাআদালত।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান শহরের বিধানপল্লির পালপাড়ার বাসিন্দা বিষ্ণু চক্রবর্তীর স্ত্রী রিম্পা চক্রবর্তী (৩০) প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে গত বছরের ১৭ জুলাই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি হন। এমনিতে তার শারীরিক কোনও সমস্যা ছিল না। পরেরদিন তার প্রসব যন্ত্রণা বাড়ে। যন্ত্রণায় তিনি ছটফট করতে থাকেন। পরিবারের লোকজন সিজার করে গর্ভস্থ সন্তান বের করে নেওয়ার জন্য চিকিৎসককে বারবার বলেন। কিন্তু, চিকিৎসক তা করেন নি। যন্ত্রণা বাড়ার বিষয়টি হাসপাতালে চিকিৎসককে জানান রিম্পার পরিবারের লোকজন। সেই সময় চিকিৎসক কানে হেডফোন লাগিয়ে মোবাইলে কথা বলছিলেন বলে অভিযোগ রিম্পার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের। রিম্পা তার যন্ত্রণার কথা বললে তাকে মারধর পর্যন্ত করা হয় বলে অভিযোগ। শেষমেশ গভীর রাতে তিনি হাসপাতালে মারা যান। এ বিষয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে নালিশ জানান রিম্পার স্বামী। তার ভিত্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্তে নামে। সেই তদন্তে সন্তুষ্ট হননি মৃতার পরিবারের লোকজন। তাদের অভিযোগ, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আড়াল করা হয়েছে তদন্ত রিপোর্টে। আদালতে মৃতার স্বামী অভিযোগ করেছেন, বারবার বলার পরেও হাসপাতালের চিকিৎসক সিজার করেননি। সে কারণে প্রসূতি ও গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের তদন্তেও অনাস্থা জানিয়েছেন তিনি। সার্কিট বেঞ্চ চালু হওয়ার পর এটি দ্বিতীয় মামলা। ২০ লক্ষ টাকার বেশি ক্ষতিপূরণের মামলা রাজ্য আদালতে করতে হয়। ৫টি জেলার বিচারপ্রার্থীদের সমস্যার কথা ভেবে আসানসোলে চালু হয়েছে ক্রেতা আদালতের সার্কিট বেঞ্চ। হাসপাতালের সুপার ডাঃ উৎপল দাঁ বলেন, আদালতের নির্দেশের কপি পাইনি। আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

About admin

Check Also

Doctor Birupaksha Biswas was transferred to Kakdwip a year ago, did not go

এক বছর আগেই কাকদ্বীপে বদলি করা হয় চিকিৎসক বিরূপাক্ষকে, যাননি; ক্যান্টিন মালিক আইনের পথে

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বিতর্কিত চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে এক বছর আগেই স্বাস্থ্য দপ্তর বদলির নির্দেশ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *