মেমারী (পূর্ব বর্ধমান) :- প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় দুর্নীতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সব জানেন। সব জেনেও তিনি চুপ করে আছেন। ওনার এই নীরবতায় বোঝা যাচ্ছে এই দুর্নীতিতে ওনার সায় রয়েছে। যারা গরীব তারা বাড়ি পাননি। অথচ তৃণমূলের নেতারা তাদের পরিবারের লোকজন বাড়ি পেয়েছে। আর এজন্যই সমস্ত পঞ্চায়েত অফিস, বিডিও অফিস ঘেরাও করে তাঁরা হিসাব চাইছেন। শুক্রবার বর্ধমানের মেমারী ২নং ব্লক অফিসে বিডিও-র কাছে স্মারকলিপি দিতে এসে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে একথা বলেন বিজেপির বিধায়ক তথা বিজেপি মহিলা মোর্চার রাজ্য নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল। এদিন মেমারীর পাহাড়হাটিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশ এবং স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে হাজির ছিলেন বিজেপির পূর্ব বর্ধমান জেলার সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়, সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত পোদ্দার, মহিলা মোর্চার সভানেত্রী দিপালী দাস, জেলা যুব মোর্চার সভাপতি শুভদেব হাজরা, ব্লক আহ্বায়ক পিণ্টু ভাণ্ডারী প্রমুখরা। এদিন এই স্মারকলিপি প্রদানকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুক্ষণ মেমারী ২-এর বিডিওর সঙ্গে তর্কাতর্কিও চলে। অগ্নিমিত্রা পলের সঙ্গে বিজেপি নেতারা বিডিও-র চেম্বারে ঢুকলে সেখানে সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরাও ঢোকেন। কিন্তু এদিন বিডিও সৈকত মাঝি সাফ জানিয়ে দেন সংবাদ মাধ্যমের উপস্থিতিতে তিনি কোনো কথাই বলবেন না। তাঁর এই বক্তব্যে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন বিজেপি নেতৃত্বরা। তাঁরা দাবী জানান, সমস্ত কথাই সংবাদ মাধ্যমের সামনেই হবে। স্বচ্ছতা থাকলে জানাতে অসুবিধা কোথায় – প্রশ্ন ছোঁড়েন বিজেপি নেতারা। যদিও দীর্ঘক্ষণ এনিয়ে দড়ি টানাটানির পর সংবাদ মাধ্যমকে বিডিও-র চেম্বার থেকে বার করে দিয়ে আলোচনা হয়। এই ঘটনা নিয়ে এদিন রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করে অগ্নিমিত্রা পল জানিয়েছেন, গোটা সরকারই চলছে দুর্নীতির সঙ্গে। তাই স্বচ্ছতা নেই, সেজন্যই সাংবাদিকদের সামনে কথা বলতে ভয় পেয়েছেন বিডিও। তাঁদের অভিযোগের উত্তর এড়িয়ে গেছেন বিডিও। এদিন অগ্নিমিত্রা পল অভিযোগ করেছেন, ১০০ দিনের কাজের টাকা, শৌচাগার তৈরীর টাকা তৃণমূলের নেতারা খেয়েছেন। এর সব হিসাব চান তাঁরা। তাঁরা ২০২০-২০২১ এবং ২০২১-২০২২ সালের সমস্ত হিসাব চান। মমতা ব্যানার্জ্জীকে এই চুরির উত্তর দিতে হবে। এদিন বীরভূমের রামপুরহাটে সাংসদ শতাব্দী রায় মধ্যাহ্ন ভোজনের ফটোসেশন করে উঠে যাওয়া সম্পর্কে অগ্নিমিত্রা পল জানিয়েছেন, এটাই তো তৃণমূলের নেতা-নেত্রী। যেখানে খোদ তৃণমূলের নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় হাতে গ্লাভস পরে আদিবাসীদের সঙ্গে নৃত্য করেন সেখানে তাঁর নেতা-নেত্রীদের কাছ থেকে এর বেশি আশা করা যায় না। চোর, ডাকাত, ক্রিমিনাল নেতারা মানুষের কোটি কোটি টাকা চুরি করে বড়লোক হচ্ছে। তিনি বলেন, এই নাটক আর কতদিন চলবে। এরপর মুখ্যমন্ত্রীকেও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হবে। হাইকোর্টের বিচারপতিদের নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে সে সম্পর্কে অগ্নিমিত্রা পল এদিন বলেন, মুখ্যমন্ত্রী সংবিধান দিবস পালন করছেন আর বিচারপতিদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে তাদের অনুকূলে রায় দেবার জন্য। গণতন্ত্রকে শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। ইডি জাকির হোসেনকে ডেকে পাঠানো সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত ভাল খবর। নেতা-মন্ত্রীরা মানুষের টাকা চুরি করে কোটিপতি হচ্ছে আর সাধারণ মানুষ আবাস যোজনার ঘর পেতে, ১০০ দিনের কাজ পেতে হাতে কাগজ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …