বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিককালে প্রকাশিত আর্থিক দুর্নীতির বিষয়-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও কমিটি তৈরি করে শুরু হল লাগাতার আন্দোলন। বৃহস্পতিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল্ডেন জুবিলি ভবনের সামনে এব্যাপারে আন্দোলনে নামলেন এই কমিটি। এদিন বুটার জেলা সম্পাদক অধ্যাপক ভাস্কর গোস্বামী, আধিকারিক ইউনিয়নের সদস্য রামবিলাস মহাপাত্র, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ইউনিয়নের সম্পাদক উজ্জ্বল মাজিল্যা প্রমুখরা এদিন বক্তব্য রাখেন। এদিন এই কমিটির পক্ষ থেকে ৭ দফা প্রশ্ন খাড়া করে হ্যান্ডবিল বিলি করা হয়েছে। এদিন আন্দোলনকারীরা প্রশ্ন তুলেছেন, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী আমানত থেকে প্রায় ২ কোটি টাকা মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই তুলে নেওয়া হল কীভাবে? এমনকি এই বিশাল দুর্নীতি ধামাচাপা দেবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে প্রাথমিক তদন্ত কমিটি করেছে তার সদস্য করা হয়েছে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই আধিকারিকদেরই। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন দুজন অধস্তন কর্মচারী অর্থসচিব ও কর্মসচিবের সই জাল করে এই দুর্নীতি সংগঠিত করেছে বলা হচ্ছে। তাঁদের বক্তব্য আদপেই সই জাল করা হয়েছে কিনা তা ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা বলতে পারবেন। কিন্তু প্রচলিত বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের সমস্ত সম্পত্তির রক্ষক হচ্ছেন অর্থসচিব। অর্থসচিবের দায়িত্বে টার্ম ডিপোজিটগুলি লোহার বাক্সে সুরক্ষিত থাকার কথা। অর্থসচিব না দিলে অর্থদপ্তরের কর্মীরা নথি পেলেন কীভাবে? আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, ব্যাংক থেকে টাকা তোলা, স্থায়ী আমানতে টাকা জমা বা তোলার ক্ষেত্রে তিনজন উপাচার্য, অর্থসচিব ও কর্মাধ্যক্ষদের মধ্যে দুজনের সই বাধ্যতামূলক। এমনকি স্থায়ী আমানত ভাঙানোর ক্ষেত্রে ইসির অনুমোদন প্রয়োজন। এব্যাপারে অনুমোদন ছিল কি? প্রশ্ন তুলেছেন এই কমিটি। তাঁরা জানিয়েছেন, বর্তমান সময়ে টাকা তোলা ও জমার ক্ষেত্রে মোবাইল সংযোগ এবং সেখানে মেসেজ আসার কথা। শুধু এটাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাংজাকশান অডিটেও এর প্রতিফলন থাকা দরকার ছিল। তাহলে কি ২-৩ বছর এই অডিট হয়নি। কারণ প্রায় এই ২ কোটি টাকা তোলা হয়েছে ২০২২ সালে। এব্যাপারে ক্যাগ রিপোর্টেও কোনো প্রতিফলন নেই কেন? তাহলে কি অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা চলছে পরিকল্পিতভাবে – প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এদিন আন্দোলনকারীরা দাবি তুলেছেন এইভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে আসল সত্যি কখনই বাইরে আসবে না। তাঁরা দাবি করেছেন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি কিংবা কোনো অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির তত্ত্বাবধানে তদন্ত কমিটি গঠন করে সত্য সবার সামনে নিয়ে আসতে হবে। কারণ এই টাকা জনগণের টাকা, ছাত্রদের টাকা তার পূর্ণ হিসাব প্রকাশ্যে আনতে হবে। এদিকে, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও কমিটির এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গৌতম চন্দ্রকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …