Breaking News

অর্থ আত্মসাতে অভিযুক্ত প্রণবানন্দ সমবায় সমিতির কর্তা ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের জেল হেপাজত

ফাইল চিত্র - ভাস্কর মুখোপাধ্যায়
ফাইল চিত্র – ভাস্কর মুখোপাধ্যায়

বর্ধমান, ২৫ মার্চঃ- নকল রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে সমিতি খুলে আমানতকারীদের জমা রাখা অর্থ আত্মসাতে অভিযুক্ত প্রণবানন্দ সমবায় সমিতি –র কর্তা ভাস্কর মুখোপাধ্যায়কে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেপাজতে রাখার নির্দেশ দিল বর্ধমানের সিজেএম আদালত। সোমবার তাকে লালবাজার সেন্ট্রাল লক আপ থেকে বর্ধমানের সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। বর্ধমান, আউশগ্রাম, ভাতার এবং মেমারি থানার চারটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে (সোন অ্যারেস্ট) এদিন তাকে আদালতে তোলা হয়। রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখার তরফে তাকে পুলিশি হেপাজতে নেওয়ার জন্য কোনও আবেদন জানানো হয়নি। জামিনের আবেদন খারিজ করেদিয়ে ধৃতকে জেল হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন সেলিম আহমেদ আনসারি।

     রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৮ সালে আমানতকারীদের জমা রাখা অর্থ ফেরত দিতে না পেরে বর্ধমানের প্রনবানন্দ সমবায় ব্যাঙ্ক বন্ধ হয়ে যায়। আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে জেলার বিভিন্ন থানায় ব্যাঙ্ক কর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই মামলাগুলির বিচার এখন বর্ধমান আদালতে চলছে। এসবের মধ্যেই ২০০০ সালে প্রণবানন্দ সমবায় ব্যাঙ্কের অনুমোদন বাতিল করে দেয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ২০০২ সালের ৬ আগষ্ট ব্যাঙ্কটিকে লিক্যুইডেশনে পাঠিয়ে দেয় সমবায় দপ্তর। যদিও জমা রাখা অর্থ ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে কোনও উদ্যোগই লিক্যুইডেটর নেয়নি বলে আমানতকারীদের অভিযোগ।

     ২০১১ সালে প্রণবানন্দ সমবায় সমিতির পুরানো লাইসেন্স ব্যবহার করে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অফিস খোলে ভাস্কর ও তার কয়েকজন সঙ্গী। অফিস খুলে কর্মী নিয়োগ এবং আমানত সংগ্রহও করা হয়। বিষয়টি নজরে আসার পর নড়েচড়ে বসে সমবায় দপ্তর। দপ্তরের তদন্তে অনিয়মের বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপরই সমবায় দপ্তরের তরফে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় ভাস্কর সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে নকল সমিতি লাইসেন্স ব্যবহার করে প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগ পেয়ে জাল নথি তৈরী করে অর্থ আত্মসাত ও প্রতারণার ধারায় কেস রুজু করে বিভিন্ন থানা। পরে থানাগুলির হাত থেকে তদন্তের দায়িত্ব যায় রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখার উপর।

     থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরই গ্রেপ্তার এড়াতে ভাস্কর ও তার সঙ্গীরা গা-ঢাকা দেয়। বন্ধ হয়ে যায় সংস্থার অফিসগুলিও। ফলে, সমস্যায় পড়েন আমানতকারী এবং সংস্থায় নিয়োগ হওয়া কয়েক হাজার বেকার ছেলে-মেয়ে। গ্রেপ্তার এড়াতে বর্ধমানের জেলা ও দায়রা আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করে সমিতির চিফ এক্সিকিউটিভ কৃষ্ণেন্দু বেদি এবং সেক্রিটারি কাম চিফ এক্সিকিউটিভ ভাস্কর। সেই আবেদনের শুনানি এখনও হয়নি।

     সমবায় দপ্তর বিভিন্ন থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর অফিস খুলতে হাইকোর্টে মামলা করে ভাস্কর ও কৃষ্ণেন্দু। হাইকোর্ট কেবল মাত্র আমানতকারীদের জমা রাখা টাকা ফেরত দেওয়ায় জন্য অফিস খোলার অনুমতি দেয়। যদিও হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে আমানতকারীদের জমা রাখা টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। গত ৯ মার্চ কলকাতার হেয়ারস্ট্রিট থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয় ভাস্কর। তাকে পুলিশি হেপাজতে নেওয়া হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে ভাস্করকে লালবাজার লক আপে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুর্নীতি দমন শাখা। এর পরই তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিভিন্ন আদালতে আবেদন জমা দেয় দুর্নীতি দমন শাখা। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে।

About admin

Check Also

The fifth short film festival was organized in Burdwan

বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *