Breaking News

রায়নায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগে ধৃত দুই তৃণমূল নেতা। এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের জেলে পোড়া শুরু হল বর্ধমানে।

Raina Thana elakar dhrito 2 jon TMC Leader-ke aaj Court-a tola hবর্ধমান, ১৮ জানুয়ারিঃ- রায়নার দাপুটে তৃনমূল নেতা নিয়ামল হক মণ্ডলকে অবশেষে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকালে তাঁর বাঁধগাছার বাড়ি থেকে রায়না থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতের বিরুদ্ধে রায়না থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। সিপিএমের আমলে তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রুজু হয়। সরকার পরিবর্তনের পর দলের অপর গোষ্ঠীর সঙ্গে এলাকা দখলের লড়াইয়ের জেরে রায়না থানায় তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা হয়। তার মধ্যে বেশিরভাগই জামিন অযোগ্য ধারায় রুজু হওয়া। তা সত্ত্বেও এতদিন পুলিশ তাকে ধরেনি। সম্প্রতি রায়না এলাকায় তৃনমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। গত কয়েকদিনে এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি হয়েছে। ঘর ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে নিয়ামল এবং তাঁর গোষ্ঠীর লোকজনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ ওঠে। এর পরই তাঁকে এবং অশোক সাঁতরা নামে অপর এক স্থানীয় তৃণমূল নেতাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। দলীয় শৃঙ্খলা না মানলে অবাধ্য নেতা-কর্মীদের জেলে পোড়ার হুমকি দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক মুকুল রায়। কিন্তু, তাতেও রায়নায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের পরিণতিতে মারপিট, বোমা বাজির ঘটনা বিন্দুমাত্র কমেনি। দল ও সরকারের উপর মহলের সবুজ সংকেত মেলার পরই দুই তৃণমূল নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের অনুমান। শুক্রবার ধৃত দু’জনকে বর্ধমানের সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। আগ্নেয়াস্ত্র এবং বোমা উদ্ধারের জন্য নিয়ামলকে ১০ দিন পুলিশি হেপাজতে নেওয়ার আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। সিজেএম সেলিম আহমেদ আনসারি নিয়ামলকে ৫ দিন পুলিশি হেপাজতে রাখার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি অশোক সাঁতরাকে জেল হেপাজতে পাঠিয়ে ২২ জানুয়ারি ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দেন সিজেএম।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২ জানুয়ারি এলাকা দখল করতে জোৎসাদি গ্রামে হামলা চালায় নিয়ামল ও তাঁর গোষ্ঠীর লোকজন। দলেরই অপর গোষ্ঠীর আইনূল শেখের বাড়িতে ভাঙচুর এবং লুটপাট চালানো হয়। রবিয়েল মল্লিক নামে এক তৃণমূল কর্মীর খড়ের পালুইয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে রায়না থানার পুলিশ গ্রামে যায়। পুলিশের সামনেই ব্যাপক বোমাবাজি চলে। পুলিশকে লক্ষ্য করেও বোমা ছোঁড়া হয়। ঘটনার বিষয়ে স্বতঃপ্রনোদিত হয়ে কেস রুজু করে পুলিশ। যদিও ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার না করায় অপর গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীরা রায়না থানা ঘেরাও করে ওসি-র অপসারণ দাবি করে। এর পর পুলিশ নিয়ামলকে গ্রেপ্তার করে। আশোককে অবশ্য দলেরই অপর গোষ্ঠীর এক কর্মীকে মারধর সংক্রান্ত অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার করেছে। নিয়ামলকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর গোষ্ঠীর লোকজন রাতে অপর গোষ্ঠীর কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর এবং লুটপাট চালায় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এই ঘটনায় রায়নার হিজলন্যা পঞ্চায়েতের বিরোধীদলনেতা তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা সেখ আজিজুল হক সহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে রায়না থানায় অভিযোগ করেন আজিজা বেগম। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মীর্জা বলেন, নিয়ামলের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। মামলাগুলির মধ্যে বেশ কিছু জামিন অযোগ্য ধারা রয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা উদ্ধার করতে এবং হামলায় জড়িত বাকিদের হদিশ পেতে তাঁকে পুলিশ হেপাজতে নেওয়া হয়েছে।

About admin

Check Also

Doctor Birupaksha Biswas was transferred to Kakdwip a year ago, did not go

এক বছর আগেই কাকদ্বীপে বদলি করা হয় চিকিৎসক বিরূপাক্ষকে, যাননি; ক্যান্টিন মালিক আইনের পথে

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বিতর্কিত চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে এক বছর আগেই স্বাস্থ্য দপ্তর বদলির নির্দেশ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *