বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- শীতভর নদী তীরে পিকনিকের ধূম চলছেই। কিন্তু তারই মাঝে রীতিমতো ব্যতিক্রম এবং নজীর গড়ল বর্ধমান সদর প্যায়ারা নিউট্রিশন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। বর্ধমান শহরের প্রান্তিক মানুষ যাঁরা কেউ অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন, কেউ রিকশা টানেন সেইরকম প্রায় ৫০০ মানুষকে নিয়ে দামোদর নদের তীরে বিদ্যাসাগর পল্লির মাঠে অনুষ্ঠিত হল এক মহামিলন উৎসব। একদিকে সকাল থেকে পিকনিকের সাধারণ আয়োজনের মত চললো খাওয়াদাওয়া। অন্যদিকে, আগতদের বিনামূল্যে চলল স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ৩জন চিকিৎসক হাজির থেকে চিকিৎসা করলেন। বয়সের ভারে কারও কোমড়ে বা কারও হাঁটুতে ব্যথা, সুগার, প্রেসারের সমস্যা প্রভৃতি নানারকম সমস্যা নিয়ে তাঁরা হাজির হলেন চিকিৎসকদের কাছে। এরই পাশাপাশি সমানতালে চলল ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের ক্যাম্প থেকে সকলকে সচেতন করার কাজ। পণ্য কেনার সময় কী কী দেখা দরকার, তারা যাতে না ঠকেন সেজন্য কী কী করণীয় সকাল থেকে তা তুলে ধরলেন ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের বর্ধমান রিজিয়নের আধিকারিক শুচিস্মিতা মুখার্জী। ৫০০ জন প্রান্তিক মানুষ ছাড়াও আরও প্রায় ৪০০ জন স্কুল কলেজ পড়ুয়া, সাধারণ মানুষ এবং সোসাইটির সদস্য সদস্যারা উপস্থিত ছিলেন। এই পিকনিকের মাঠ থেকে দামোদর বাঁচাও কর্মসূচি নেওয়া হয়। দামোদরের মৎস্যজীবীরা তাঁদের জীবন যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেন। মনোরঞ্জনের জন্য বয়স্ক দু:স্থ মানুষদের মিউজিক্যাল চেয়ার ও বল ছোড়ার প্রতিযোগিতা হয়। বিলি বাগ, সুমিত্রা চৌধুরি, খাইরুন্নেসা বিবি, শেখ হাবিবুর রহমানরা বলেন, ছোট্ট বেলায় ফিরে গেলাম, ভুলে গেলাম কিছুক্ষণের জন্য বাতের ব্যথা। প্রতিটি ইভেন্টের বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। দুপুরের খাবারে মাছ, মাংসের নানা পদের সঙ্গে বিশেষ আকর্ষণ ছিল দামোদরের মাছ। প্রান্তিক মানুষদের হাতে শীতের চাদর তুলে দেওয়া হয়। সোসাইটির সম্পাদক প্রলয় মজুমদার বলেন, বিগত সাত বছর ধরে এই মিলন মেলার আয়োজন করছেন। এই পিকনিকের মাধ্যমে দু:স্থ মানুষদের মানসিক সুস্থ রাখার চেষ্টা করছেন তাঁরা। শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের মেলবন্ধনের মাধ্যমে মানুষের রোগ প্রবণতা কমানো সম্ভব এবং আয়ু বাড়ানো সম্ভব। এছাড়াও এবছর থেকে বর্ধমানের আয়ুরেখা দামোদরকে বাঁচানোর ডাক দিয়েছেন তাঁরা। এরই পাশাপাশি এই পিকনিক মাঠে পুরনো অথচ ভাল পোশাকের হাট করা হয়। ২০ টাকার বিনিময়ে তা বিক্রি করা হয়। এ প্রসঙ্গে প্রলয় মজুমদার জানিয়েছেন, অনেকেই বিনা অর্থে কিছু নিতে চাননা। তাই এই মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে এই পোশাক সংগ্রহ করে তা অন্যকে দেবার উপযুক্ত করে এই হাটে এনেছেন। উল্লেখ্য, এই পিকনিকে বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান থানার আইসি দিব্যেন্দু দাস। অন্যান্যদের মধ্যে সংস্থার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দ্যুতি কোনার, অঙ্কিতা সাম, চৈতালি ঘোষ, ঐন্দ্রিলা সাধুখাঁ, অনির্বাণ নন্দী, ওয়াসেফ আলি, ফারহীন জান্নাত প্রমুখরা।
Check Also
প্রিয় দলের খেলা দেখতে উত্তেজনায় ফুটছে বর্ধমানের ফুটবল প্রেমীরা, হতাশ ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা বর্ধমানে ৩ থেকে ৬ জানুয়ারি ফুটবল ম্যাচ খেলতে আসছে মোহনবাগান, মহামেডান, কালীঘাট মিলন সংঘ এবং জামশেদপুর দল। হতাশ ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা।
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমানের রিয়েল বুল ফুটবল কোচিং সেন্টারের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে বর্ধমানের স্পন্দন …