বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- পতঙ্গবাহিত রোগ ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া প্রভৃতি দূরীকরণে এবার মিশন নির্মল বাংলার ঢংয়ে রীতিমত কোমড় বেঁধে নামল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। সোমবার এব্যাপারে বর্ধমান জেলা পরিষদে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে হাজির ছিলেন জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রতিনিধি, মিশন নির্মল বাংলার জেলা সংযোজক, জেলা পঞ্চায়েত দপ্তরের আধিকারিক প্রমুখরাও। হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু এবং জনস্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ গার্গী নাহাও। গার্গী নাহা এদিন জানিয়েছেন, যেভাবে মিশন নির্মল বাংলার অভিযান চালানো হয়েছিল এবং তার ফলে পূর্ব বর্ধমান জেলাকে নির্মল জেলা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই একইভাবে একই কায়দায় এবার গোটা জেলা জুড়েই ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া সহ পতঙ্গবাহিত রোগ দূরীকরণে কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। যেহেতু পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন তাই বোর্ড গঠনের আগে গ্রাম ভিলেজ পার্সনদের দিয়ে গ্রামের সামগ্রীক পরিস্থিতি বিচার করা এবং বিশেষ করে জমে থাকা জল দূরীকরণে তাদের কাজে নামানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই কাজের জন্য পূর্ব বর্ধমান জেলায় ১ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে পাওয়া গেছে বলে গার্গী নাহা জানিয়েছেন। পূর্ব বর্ধমান জেলা মিশন নির্মল বাংলার সংযোজক তপন পাল জানিয়েছেন, মিশন নির্মল বাংলার কর্মসূচীকে সাফল্যমণ্ডিত করতে তৈরী করা হয়েছিল একেবারে পাড়াগত নজরদারী টিম। তাঁরা প্রতিনিয়ত নজরদারী চালিয়েছেন। এবার এই পতঙ্গবাহিত রোগ দূরীকরণে ঠিক সেই মিশন নির্মল বাংলার টিমকেই কাজে লাগানো হল। তাঁরাই নজরদারী চালাবেন, কোথাও জল জমছে কিনা, লার্ভা জন্মাচ্ছে কিনা প্রভৃতি বিষয়গুলি নিয়েও তাঁরা নজরদারী চালাবেন এবং সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। গার্গী নাহা জানিয়েছেন, জেলা থেকে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া রোগকে একেবারে দূর করার জন্য এদিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রতিটি পঞ্চায়েতকে মশা নিরোধক স্প্রে করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা পঞ্চায়েতকেই গ্রহণ করতে হবে। তিনি জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই এব্যাপারে নির্দেশ পঞ্চায়েতে পঞ্চায়েতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, পতঙ্গবাহিত রোগ দূরীকরণে প্রয়োজনীয় সাহায্য ও উপকরণ যোগান দেবে পঞ্চায়েত এবং তাকে বাস্তবায়িত করবে নজরদারী টিম, ভিলেজ রিসোর্স পারশন প্রমুখরা। তিনি জানান, জোরকদমে এই কাজ শুরু হওয়ায় তাঁরা আশা করছেন জেলা থেকে একেবারেই নির্মূল হবে এই রোগের মূল ভিত্তি। এরই পাশাপাশি কিছু স্থানীয় প্রতিষেধকও ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে রান্না করার পর পোড়া তেল, পোড়া মোবিল তেল, মিষ্টির দোকানে বর্জ্য পদার্থ হিসাবে গাদ প্রভৃতিকে জমা জলে ফেলে দিলে সেখানে এই ধরণের মশা আর জন্মাবে না। গার্গী নাহা জানিয়েছেন, এই সমস্ত গোটা বিষয়টিকে নিয়েই তাঁরা প্রতিটি গ্রামে গ্রামে ব্যাপক প্রচারেরও উদ্যোগ নিয়েছেন। একদিকে, সরকারী প্রতিষেধক ও ব্যবস্থাপনা অন্যদিকে, স্থানীয় মানুষকেও মিশন নির্মল বাংলা অভিযানের মতই এই প্রকল্পে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
Tags Bardhaman Malaria prevent dengue Purba Bardhaman ডেঙ্গু পূর্ব বর্ধমান ম্যালেরিয়া
Check Also
বর্ধমান টাউন হলে শুরু হলো লিটল ম্যাগাজিন মেলা, চলবে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- শুক্রবার থেকে শুরু হলো ‘বর্ধমান লিটল ম্যাগাজিন মেলা ২০২৪’। বর্ধমান টাউন …