বিপুন ভট্টাচার্য, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ২০১৯ সালের পর থেকে দুর্গাপুর প্রোজেক্ট লিমিটেড বা ডিপিএল বকেয়া ডিএ দিচ্ছে না। অবিলম্বে ডিপিএল বকেয়া মহার্ঘ্যভাতা প্রদান না করলে জোড়ালো আন্দোলনের জন্য কর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হল শনিবার বর্ধমান সংস্কৃতি লোকমঞ্চে আয়োজিত ওয়েষ্ট বেঙ্গল ষ্টেট ইলেক্ট্রিসিটি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনয়ার্স এ্যাসোসিয়েশনের সপ্তম বার্ষিক সাধারণ সভা ও রাজ্য সম্মেলন থেকে। ডিএ-র দাবীতে গোটা রাজ্য জুড়েই রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ক্রমশই বাড়ছে। সম্প্রতি বামপন্থী মনোভাবাপন্ন কর্মচারীরা ডিএ-র দাবীতে কলকাতার রাজপথে আন্দোলনও শানিয়েছে। তারই মাঝে বিদ্যুত দপ্তরের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররাও সরব হয়েছেন এদিন পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর প্রোজেক্ট লিমিটেডের ডিএ প্রদানের বিষয়ে। শনিবার সংস্কৃতি লোকমঞ্চে চারটি সংস্থার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের বার্ষিক ৭ম সাধারণ সভা এবং রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বর্ধমানের বাজেপ্রতাপপুর রামকৃষ্ণ আশ্রমের মঠাধ্যক্ষ স্বামী অজ্ঞেয়ানন্দজী মহারাজ। উপস্থিত ছিলেন অল ইণ্ডিয়া ফেডারেশন অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের সেক্রেটারি জেনারেল মনমোহন রাজবংশী, এসডিইএ-র রাজ্য সভাপতি মনন সেন শর্মা, এসডিই- সাধারণ সম্পাদক রামকৃষ্ণ দাস প্রমুখরা। সংগঠনের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ তপন মুখার্জ্জী জানিয়েছেন, এই সম্মেলনে প্রায় ৯০০ প্রতিনিধি হাজির থাকার কথা থাকলেও গোটা রাজ্য জুড়েই জেলায় জেলায় দুয়ারে সরকার প্রকল্প চলছে। ফলে সেই দায়িত্ব পালনের জন্য অনেকেই আসতে পারেননি। তা সত্ত্বেও এদিন প্রায় ৫০০ প্রতিনিধি হাজির ছিলেন বলে তিনি জানিয়েছেন। অন্যদিকে, এদিন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর মল্লিক জানিয়েছেন, তাঁদের মূল লক্ষ্য রাজ্য বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের প্রতি বঞ্চনার অবসান ঘটানো। দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের দাবী ছিল, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ক্লাস ২ অফিসার পদে উন্নীত করা। সেই সাথে প্রথম প্রোমোশন হিসাবে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে উন্নীত করা। এই দাবীগুলো নিয়েই এদিনের সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে। সেইসঙ্গে বর্তমানে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে দেশজুড়ে যে বেসরকারিকরণের হাওয়া উঠেছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে পরবর্তী আন্দোলনের রূপরেখা নিয়েও এদিন আলোচনা করা হয়েছে। জাহাঙ্গীর মল্লিক এদিন জানিয়েছেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের দাবী দপ্তরেরই উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা মানছেন না। মূলত তাঁদের জন্যই ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা বঞ্চিত হয়ে রয়েছেন বছরের পর বছর। তিনি জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই তাঁরা এই বিষয়ে জোড়ালো আন্দোলনের পথে হাঁটার চিন্তাভাবনা করে ফেলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, স্বশাসিত সংস্থায় রাজ্য সরকারের থেকে ডিপার্টমেন্টের নীতিনির্ধারকের ভূমিকাটাই গুরুত্বপূর্ণ। ডিপার্টমেন্ট সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার পর রাজ্য সমস্যা তৈরী করলে তখন আমরা রাজ্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে পারি। কিন্তু বিভাগীয় আধিকারিকরা তাঁদের দাবীকে সরকারের কাছে তুলে ধরছেন না। তাই এবার তাঁরা আধিকারিকদের বিরুদ্ধেই আন্দোলনে সান দিতে চলেছেন। এরই পাশাপাশি জাহাঙ্গীর মল্লিক এদিন জানিয়েছেন, তাঁরা দাবী করেছেন, চাহিদা বাড়লেও বিদ্যুতের মূল্য নাগালের মধ্যে থাকতে হবে। যদিও এদিন তিনি দাবী করেছেন, গত ৮ থেকে ১০ বছরে বিদ্যুতের দাম খুব একটা বাড়েনি। তিনি জানিয়েছেন, বিদ্যুতের বেসরকারীকরণের যে ঢেউ তা বাস্তবায়িত হলে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির পরিমাণ আরও বেশি হবে। উল্লেখ্য, বিদ্যুত দপ্তরের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রায়শই বিভিন্ন দুর্ঘটনার দায়ভার একতরফাভাবে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের ওপর চাপিয়ে দেবার প্রবণতা এবং সাসপেনশনের বিষয় নিয়ে এই সংগঠন লড়াই করছে বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীর মল্লিক। আর তাই এই সম্মেলনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি পৃথক আলোচনা চক্রেরও আয়োজন করা হয়।
Tags Diploma Engineer
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …