Breaking News

ভারতের সামনে অনেক সমস্যা, সমস্যাকে আঘাত না করে সমস্যার মধ্যেই সমাধান খুঁজুন – মোহন ভাগবত

Mohan Bhagwat addressed RSS meeting in Burdwan

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ভারতে সমস্যা আছে ঠিকই। চলতে গেলে ছোট-বড় নানা সমস্যা থাকবেই। কিন্তু সেই সমস্যাকে আঘাত করে বাড়িয়ে না তুলে সমস্যার মধ্যেই থাকা সমাধানকে মাথা ঠান্ডা রেখে খুঁজে বার করে সমাধান করার কথা বলে গেলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত। রবিবার বর্ধমানের সাই কমপ্লেক্সে (SAI) আয়োজিত আরএসএসের মধ্যবঙ্গীয় সভায় বক্তব্য রাখতে আসেন মোহন ভাগবত। উল্লেখ্য, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে রবিবার পর্যন্ত বর্ধমানে বিভিন্ন সাংগঠনিক কার্যক্রম করেন তিনি। এদিন প্রকাশ্য সভায় নাম না করে একাধিক প্রসঙ্গ তুলে গেলেন মোহন ভাগবত। তাঁর এই সভা নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আপত্তি এবং হাইকোর্টের নির্দেশে এই সভার অনুমতি দেওয়ায় সভায় ব্যবহৃত সাউন্ড বক্সের আওয়াজ মাপতে বসানো হয় ইলেকট্রনিক নয়েজ লিমিটার মেশিন। দুই বর্ধমান ছাড়া, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ এবং নদীয়া থেকে এদিন কয়েক হাজার স্বয়ংসেবক সদস্য হাজির ছিলেন। Mohan Bhagwat addressed RSS meeting in Burdwan হাজির ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডা. সুভাষ সরকার, অগ্নিমিত্রা পাল প্রমুখরাও। এদিন মোহন ভাগবত বলেন, ভারত অখণ্ড। ভারত একটা ভূগোল নয়। ভূগোল ছোট বড় হয়। ভারত একটি স্বভাব। সংঘ সম্পূর্ণ হিন্দু সমাজ গঠন করতে চাইছে। এই দেশকে রক্ষা করার উত্তর দায়িত্ব হিন্দুদের। ভারতের এই স্বভাব যারা মানতে পারেনি তারা আলাদা দেশ তৈরি করে নিয়েছেন। আজ এই মাঠে হয়ত অনেক বাধা অতিক্রম করে নিজেদের গাঁটের কড়ি খরচ করে সংঘের সদস্যরা সভায় এসেছেন। ফলে যাঁরা ভারত নামের এই স্বভাব মেনে নিয়েছেন তাদের বুঝতে হবে। ভারতের এই স্বভাব হল বিশ্বের ভিন্ন ভিন্নতাকে মেনে চলা। সবারই আলাদা আলাদা বিশেষতা রয়েছে। কিন্তু সেই বিভেদের মাঝে একতাই ভারত। ইন্দো-আর্য সভ্যতার আগে থেকে এটা চলে আসছে। সবার ভিন্নতাকে সম্মান দিয়ে বাঁচো। কিন্তু ঐক্য বজায় রাখো। এটাই বড় বিষয়। নিজে বড় হলে অন্যকে বড় করতে হবে – সেটাই বীরত্ব। ভারতে রাজা-মহারাজাদের শাসন চলেনি। এখানে অনেকে ধনবান আছেন। কিন্তু তাদের কথাই শেষ কথা নয়। কে কত বড় ধনবান, কত কামাই করেন সেটাতে ভারত চলে না। ভারতে এমন ব্যক্তিত্বও রয়েছেন, যিনি নিজে এক টাকাও কামাননি। সেই স্বামী বিবেকানন্দের নাম সকলে মানে। এটাই ভারতের স্বভাব। হিন্দু সমাজ এটাই। হিন্দু সমাজ এবং ভারত সংস্কৃতি, ভারত এক। আজকের অবনতির সময়েও এই কথা সমানভাবে প্রযোজ্য। Mohan Bhagwat addressed RSS meeting in Burdwan শিক্ষিত, শ্রেষ্ঠ সে, যিনি মহিলাদের মায়ের রূপে দেখেন, পরের সম্পত্তিতে লোভ করেন না, নিজে রোজগার করে খান। কোনো দেশের সমাজের গুণগত মানই দেশের মান তৈরি করে। দেশকে তৈরির করার আগে সমাজকে তৈরি হতে হয়। নেতা-মন্ত্রী, শাসক, প্রশাসক তৈরি হবে কিন্তু দেশের ভাগ্য নির্ধারণ করে সমাজ। এই প্রসঙ্গে ডার্কেস্ট আওয়ার চলচ্চিত্রের উল্লেখ করে মোহন ভাগবত বলেন, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে ইংল্যাণ্ড পরাজিত হতে বসেছিল, ৪০ হাজার সৈন্য শত্রুপক্ষের ঘেরাটোপে পড়ে গিয়েছিল। তাদের ছোট ছোট মাছ ধরা নৌকায় উদ্ধার করতে হচ্ছিল। সেই সময় ইংল্যান্ডের রাজাকে তার মন্ত্রীমণ্ডলী কানাডায় চলে যেতে বলেন। রাজা চার্চিলকে বললেন, যে জনতা তাকে নির্বাচিত করেছিলেন তারা কি বলছে? চার্চিল জনতার রায় নিলেন। দেখলেন জনতা বলছে তারা শত্রুপক্ষের কাছে মাথা নোয়াবেন না। লড়বেন। এরপর ইংল্যাণ্ড লড়ল। সৈন্যবলের জোরে নয়, সমাজের মনোবলের জোরে জিতল ইংল্যাণ্ড। তেমনি একতাই ভারতের মূল বৈশিষ্ট্য। সাম্যতা ভারতের বৈশিষ্ট্য। হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতেই হবে। সেই কাজ আর এস এস করছে। Sukanta Majumdar and Dilip Ghosh blame excessive passenger pressure for the stampede at New Delhi station মোহন ভাগবত বলেন, সমস্যা জীবনের অঙ্গ। সমস্যা থাকবেই। তার মধ্যেই এগিয়ে যেতে হবে। উদাহরণ দিয়ে বলেন, মহাভারতের যুদ্ধ শেষে নারায়ণী সেনার সেনাপতি সাত্যকি, অর্জুন এবং কৃষ্ণ শিকারে গেলেন। সেই সময় এক মায়াবী রাক্ষসের সঙ্গে লড়াই হল সাত্যকি, অর্জুনের। রাক্ষসকে যত প্রহার করা হয় সে ততই বড় হতে থাকে। এই অবস্থায় দুজনেই পরাজিত হয়। এই অবস্থায় কৃষ্ণ পরিস্থিতি বুঝে মাথা ঠান্ডা রেখে রাক্ষসকে ফের তার পুরনো অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে এসে তাকে বোতলে বন্দি করে ফেলে। রাক্ষস আঘাত করলেও কৃষ্ণ মাথা ঠান্ডা রেখে নিজের কাপড়ে বেঁধে ফেলেন। সমস্যা হল এই রাক্ষসের মতই, তাকে যত আঘাত করবে সে ততই বেড়ে যাবে। সমস্যাকে মেটাতে হলে আগে বোঝো সমস্যাটা সম্পর্কে, তারপর মাথা ঠান্ডা রেখে সমাধানের রাস্তা সমস্যার মধ্যেই খোঁজো। আমাদের দেশের সামনে অনেক সমস্যা আছে এটা ঠিকই। তিনি বলেন, আমাদের ঐক্যই সংগঠন। আমাদের একতার আধার আত্মীয়তা। Sukanta Majumdar and Dilip Ghosh blame excessive passenger pressure for the stampede at New Delhi station হিন্দু সমাজের মধ্যে এই আত্মীয়তা বাড়াতে হবে। আর হিন্দু সমাজের মধ্যে গোটা বিশ্বের আত্মীয়তা গড়ে তুলতে হবে। আর এস এস নিয়ে সমালোচনার জবাবে মোহন ভাগবত এদিন বলেন, সারা দেশে ১ লক্ষ ৩০ হাজার প্রকল্প চালাচ্ছে সংঘ। ভারতের উন্নতির জন্য। কোনোরকম সরকারি সাহায্য না নিয়ে নিজেদের ক্ষমতায় এটা করছে। সংঘের কাজ সমাজকে সংগঠিত করা। এই সংঘের কাজ বুঝতে হবে। গৌতম বুদ্ধের পর একমাত্র এই সংঘ এই কাজ করছে। এব্যাপারে যারা ভাবছেন তাঁদের স্বার্থের দোকান বন্ধ হয়ে যাবে তাঁরা আসুন সংঘে। দেখুন। বুঝুন। ইচ্ছা হলে যুক্ত হন, নাহলে বেড়িয়ে যান। বাইরে থেকে সন্দেহ, সমালোচনা না করে বুঝুন। এখানে স্বার্থের কোনো লালসা নেই। বরং নিস্বার্থে এখানে দিতে হয়। এটাকে অনুভব করতে হবে।

About admin

Check Also

Sukanta Majumdar and Dilip Ghosh blame excessive passenger pressure for the stampede at New Delhi station

নয়াদিল্লী স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনায় অতিরিক্ত যাত্রীচাপকেই দায়ী করলেন সুকান্ত, দিলীপ

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- নয়াদিল্লী স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে ১৮ জনের মৃত্যুর ঘটনায় অতিরিক্ত যাত্রীর চাপকেই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *