গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- খাগড়াগড় ও বুদ্ধ গয়ায় বোমা বিস্ফোরণের মূল মাথা মহম্মদ জাহিদুল ইসলাম ওরফে কওসরকে গ্রেপ্তার করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। বেঙ্গালুরু থেকে তাকে ধরেন এনআইএ-র গোয়েন্দারা। সেখানকার আদালতে পেশ করা হয় তাকে। তদন্তের প্রয়োজনে তাকে বিহারের পাটনায় নিয়ে যেতে চায় এনআইএ। সেজন্য বেঙ্গালুরুর আদালতে ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন করে এনআইএ। আদালত ৫ দিনের ট্রানজিট রিমান্ডমঞ্জুর করেছে। এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, খাগড়াগড় এবং বুদ্ধ গয়ায় বিস্ফোরণের মূল চক্রী কওসর। বীরভূমের বোলপুরে সে পরিবার নিয়ে থাকত। তার নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে এনআইএ-র গোয়েন্দাদের মনে। সে বাংলাদেশি নাগরিক হতে পারে বলে গোয়েন্দাদের অনুমান। বাংলাদেশের জামাত-উল-মুজাহিদিন জঙ্গীগোষ্ঠীর অন্যতম প্রচারক ছিল সে। বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। সেখানকার রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জেহাদে সে মূল মাথা ছিল। বাংলাদেশ সরকার তাকে ধরার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালায়। ধরা পড়ার ভয়ে সে বাংলাদেশ থেকে এ রাজ্যে আসে। মুর্শিদাবাদ হয়ে সে বীরভূমের বোলপুরে আসে। বাংলাদেশ থেকে এসে এদেশে জামাত-উল-মুজাহিদিনের স্লিপার সেল তৈরির মূল দায়িত্বে ছিল সে। এ রাজ্যে জঙ্গীগোষ্ঠীর সংগঠন বাড়ানোর পাশাপাশি অস্ত্র সরবরাহের দায়িত্ব ছিল তার উপর। বোমা তৈরিতে সে অত্যন্ত সিদ্ধহস্ত। সে কারণে বোমারু মিজান বলে সংগঠনে তার পরিচয় রয়েছে। জামাত-উল-মুজাহিদিন জঙ্গীগোষ্ঠী বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বাড়িভাড়া নিয়ে অস্ত্র কারখানা গড়ে তোলে। তবে, খাগড়াগড়ে না থেকে কওসর বর্ধমান শহরের বাবুরবাগে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে। খাগড়াগড়ে তৈরি বোমা ও অন্যান্য অস্ত্র সে বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দিত। তবে, এলাকায় সে কারও সঙ্গে সেভাবে মেলামেশা করত না। যদিও শাসক দলের কয়েকজনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলে তদন্তে নেমে জানতে পারেন গোয়েন্দারা। খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরই সে বাবুরবাগ ছেড়ে পালায়। বিস্ফোরণের পর হৈ-চৈ শুরু হওয়ার পর বাবুরবাগে কওসরের ডেরার বিষয়টি জানা যায়। পালসার বাইক নিয়ে বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ পরই সে গা-ঢাকা দেয়। বাইক নিয়েই সে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করত। মাঝেমধ্যেই গভীর রাতে তার কাছে লোকজন আসা-যাওয়া করত বলে জানতে পারেন তদন্তকারী অফিসাররা। কওসর গা-ঢাকা দেওয়ার পর তার ভাড়াবাড়িতে তল্লাশি চালান এনআইএ-র গোয়েন্দারা। বাড়ি থেকে কয়েকটি পিস্তল, একটি ল্যাপটপ ও মেমোরি কার্ড মেলে। একটি ডায়েরিও পাওয়া যায় ঘর থেকে। ল্যাপটপ থেকে জামাত-উল-মুজাহিদিন জঙ্গীগোষ্ঠীর কার্যকলাপের বিষয়ে বেশকিছু তথ্য মেলে। ডিএনএ টেস্টের জন্য তার ব্যবহৃত দাঁত মাজার ব্রাশও বাজেয়াপ্ত করে এনআইএ। তার হদিশ পেতে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ছবি আঁকানো হয়। তাকে ধরার জন্য ৫ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে এনআইএ। খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের পরও সে সংগঠন বাড়ানোর কাজ চালিয়ে যায়। জামাত-উল-মুজাহিদিন জঙ্গীগোষ্ঠীর মূল মাথাদের কয়েকজন ধরা পড়ার পর সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়ে। নতুন করে সংগঠন তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল কওসর। বুদ্ধ গয়ায় দালাই লামার সফরের আগে বিস্ফোরণের ঘটনাতেও সে জড়িত বলে জানতে পারেন এনআইএ-র গোয়েন্দারা। আইএস জঙ্গীগোষ্ঠীর সঙ্গেও সে জড়িত বলে গোয়েন্দাদের অনুমান। এর আগে কয়েকবার তাকে নাগালে পেয়েও অল্পের জন্য ধরতে পারেন নি গোয়েন্দারা। কওসর ধরা পড়ায় জামাত-উল-মুজাহিদিন এবং আইএস জঙ্গীগোষ্ঠীর এদেশে কার্যকলাপের বিষয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে বলে আশা করছে এনআইএ।
Tags Baburbag Bangalore Bangladesh Bardhaman Bengaluru Bihar Blast Bodh Gaya case Bodhgaya Boma Miyan Bomb Burdwan Burdwan Blast East Bardhaman East Burdwan Gaya IED Improvised explosive device Islamic terrorist organisation Jamaat-ul-Mujahideen Jamaat-ul-Mujahideen Bangladesh JMB JMB Bangladesh Kausar Khagragarh Blast Khagragarh blast case Militant Militant groups Mizan Mohammed Jahidul Islam Munna NIA Patna Purba Bardhaman terrorist terrorist organisation ইসলামী সন্ত্রাসী সংগঠন এনআইএ কওসর খবর খাগড়াগড় খাগড়াগড় বোমা বিস্ফোরণ জঙ্গি জঙ্গিগোষ্ঠী জঙ্গী জঙ্গীগোষ্ঠী জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা জামাত-উল-মুজাহিদিন জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ পাটনা পূর্ব বর্ধমান বর্ধমান বাবুরবাগ বাংলা বাংলা খবর বাংলাদেশ বিস্ফোরক বিহার বুদ্ধ গয়া বোমা বিস্ফোরণ বেঙ্গালুরু সংবাদ
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …