গলসী ও কাটোয়া (পূর্ব বর্ধমান) :- জাতীয় কংগ্রেসের এক সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে ফরোয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন সাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। প্রধান-সহ পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় থাকা গোষ্ঠীর দুজন সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করায় পূর্ব বর্ধমান জেলার গলসি ২ ব্লকের সাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দখল করল তৃণমূল কংগ্রেস। এতদিন এরাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দল কংগ্রেস, বিজেপি এবং বাম সদস্যরা জোট করে পঞ্চায়েত পরিচালনা করছিল। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়ে জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় দুজনের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিলেন। সাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তথা ফরোয়ার্ড ব্লকের জয়ী সদস্য শিখা সাঁতরা এবং কংগ্রেসের জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য সেখ সাহেদুল্লা তৃণমূলে যোগ দিয়ে বলেন, এবার ভালোভাবে পঞ্চায়েত এলাকার উন্নয়নের কাজ করতে পারব।
প্রধান শিখা সাঁতরা বলেন, সাঁকো পঞ্চায়েতে কিছু কাজকর্ম হচ্ছে না। কাজ করতে দিচ্ছে না। তাই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলাম। জাতীয় কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য সেখ সাহেদুল্লা বলেন, ভারতে একটা অস্থিরতার বাতাবরণ চলছে। সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে একমাত্র দাঁড়াতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এর জন্য আমরা ঠিক করেছি সামনের লোকসভা নির্বাচনে নেত্রীর হাতকে শক্ত করতে তাঁর সাথে উন্নয়নের শরিক হতে। এর জন্য স্বেচ্ছায় আমরা যোগ দিলাম।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছিল। ১৩ আসনের সাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল কংগ্রেস এককভাবে ৬ টি আসন দখল করেছিল। বাকি ৭ টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ১ টি, সিপিআই(এম) ১ টি, বিজেপি ৪ টি এবং ফরোয়ার্ড ব্লক ১ টি আসনে জয়ী হয়। ত্রিশঙ্কু অবস্থায় তৃণমূল কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে রাজ্যের শাসক দল বিরোধীরা একজোট হয়ে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করেছিল। মঙ্গলবার প্রধান-সহ এক সদস্যের দল বদল করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় সাঁকো পঞ্চায়েত তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় এলো।
তৃণমূল কংগ্রেসের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, তাঁরা বিভিন্ন কারণে পঞ্চায়েত পরিচালনা করতে পারছিলেন না। সেই জায়গা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থা রেখে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করতে চাইছেন। এবং স্ব-ইচ্ছায় মঙ্গলবার কাটোয়ায় দলীয় কার্যালয়ে এসে যোগদানের আবেদন জমা দিয়েছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের নির্দেশে তাঁদেরকে দলে যোগ করিয়ে নেওয়া হলো। এতে পঞ্চায়েত পরিচালনায় সুবিধে হবে। তৃণমূল কংগ্রেস বাদে বিভিন্ন দল মিলে ৭ জন ছিলেন। তাতে মতের মিল হচ্ছিল না। ফলে কাজের সমস্যা হচ্ছিল। এতে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়ছিলেন প্রধান। কারণ দায়দায়িত্ব সব প্রধানের। ফলে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন। শিখা সাঁতরাকে প্রধানের দায়িত্বে রাখ হবে বলে ঠিক হয়েছে। ভয় দেখিয়ে দলে টানার প্রসঙ্গে এদিন রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ভয় দেখাতে যাবে কেনো? কোনও প্রয়োজন নেই। এমনকি এর সাথে লোকসভা নির্বাচনেরও কোনও সম্পর্ক নেই। লোকসভা কেন্দ্রের এলাকা বিশাল থাকে, তাতে এক-দুজন সদস্য দলে ঢুকে বিশাল কিছু পরিবর্তন করতে পারবেন না। আসলে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি আস্থা, এটাই বড় বিষয়।
Tags Gram Panchayat Sanko Sanko Gram Panchayat Trinamool Congress
Check Also
সাঁকটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে চালু হলো এআই প্রযুক্তির স্মার্ট ক্লাস জেলার মধ্যে প্রথম সরকার পোষিত হাইস্কুলে চালু এআই প্রযুক্তির স্মার্ট ক্লাস
রায়না (পূর্ব বর্ধমান) :- স্কুলের প্রাক্তনীদের ঐকান্তিক চেষ্টায় পূর্ব বর্ধমানের রায়না থানার সাঁকটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে …