Breaking News

চিকিৎসকের স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া গাড়ির চালককে হেপাজতে নিল পুলিস

The driver arrested for murdering a doctor's wife was produced in court today

গণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- কেবলমাত্র গাড়ির চালকের টাকার দাবি না মেটানোর জন্যই যে বর্ধমান শহরের খোসবাগানের তুলা লেনের চিকিৎসক পত্নী মৌসুমী নাগকে খুন হতে হয়েছে বলে মনে করছে না পুলিস। খুনের পিছনে অন্য কোনও কারণও থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিস। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসকের গাড়ি চালিয়েছে খুনে ধৃত তপন দাস ওরফে তপা। চিকিৎসক ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে বহুবার তার অশান্তি হয়েছে। কখনও সখনও তা হাতাহাতির পর্যায়েও পৌঁছেছে। কিছুদিন আগে মৌসুমী দেবীকে গলা টিপে ধরেছিল তপন। এনিয়ে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। তদন্তে নামে পুলিস। দু’পক্ষকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়। পরে বিষয়টি মিটে যায়। অভিযোগ নিয়ে আর অগ্রসর হননি চিকিৎসক ও তাঁর স্ত্রী। চিকিৎসক চাইলেও তাঁর স্ত্রীর হস্তক্ষেপে বেশিরভাগ সময় তপনের সঙ্গে ঝামেলা মিটেছে। একবার অশান্তি চরমে পৌঁছায়। কাজ ছেড়ে শহরের এক মহিলা চিকিৎসকের গাড়ি চালাতে শুরু করে তপন। কিছুদিনের মধ্যেই মহিলা চিকিৎসকের গাড়ি চালানো ছেড়ে পুরানো জায়গায় ফিরে আসে তপন। চিকিৎসক ও তাঁর স্ত্রী ওই মহিলা চিকিৎসককে তপনকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন বলে জেনেছে পুলিস। বারবার ঝামেলার পরও কি কারণে তপনকে কাজে বহাল রাখা হয়েছিল তা ভাবাচ্ছে পুলিসকে। জেরায় এমন আরও কিছু তথ্য উঠে এসেছে যা থেকে পুলিসের অনুমান, খুনের পিছনে ‘অন্য কোনও’ কারণ থাকতে পারে। তাছাড়া, মৃতার যৌনাঙ্গের কাছে কাপড়ে রক্তের চিহ্ন পেয়েছে পুলিস। লাঠি দিয়ে মৌসুমী দেবীর যৌনাঙ্গে আঘাত করা হতে পারে বলে পুলিসের সন্দেহ। তবে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট না মেলা পর্যন্ত এ ব্যাপারে নিশ্চিত নয় পুলিস। স্ত্রীর সঙ্গে চিকিৎসকের সম্পের্কর বিষয়েও খোঁজখবর শুরু করেছে পুলিস। মৃতার মোবাইলটি পুলিস বাজেয়াপ্ত করেছে। তা থেকে ঘটনার সূত্র মিলতে পারে বলে আশা পুলিসের। তপনের জীবনযাত্রার বিষয়েও খুঁটিয়ে খোঁজ নিচ্ছে পুলিস। চিকিৎসক দাবি করেছেন, নেশা ও জুয়ায় আসক্ত তপন। জুয়ার ও নেশার জন্য সে হামেশাই টাকা দাবি করত। এ নিয়েও খোঁজখবর শুরু করেছে পুলিস।The driver arrested for murdering a doctor's wife was produced in court today
মঙ্গলবার ধৃত গাড়ি চালককে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। তদন্তের প্রয়োজনে ধৃতকে ৭ দিন পুলিসি হেফাজতে নিতে চেয়ে আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ধৃতকে ৫ দিন পুলিসি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম কল্লোল ঘোষ। পুলিস জানিয়েছে, সোমবার বেলা ৩টে নাগাদ ডাঃ সুব্রত নাগের বাড়িতে হাজির হয় তপন। সে মাইনের টাকা মিটিয়ে দিতে বলে। মাস শেষ না হওয়ায় চিকিৎসক ও তাঁর স্ত্রী মাইনে দিতে চাননি। এনিয়ে বচসা বাধলে চিকিৎসককে কুকুর তাড়ানো লাঠি দিয়ে মারে তপন। স্বামীকে বাঁচাতে গেলে মৌসুমী দেবীকে লাঠি দিয়ে এলোপাথারি মারধর করে তপন। স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে চিকিৎসক ও তাঁর স্ত্রীকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক মৌসুমী দেবীকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার বিষয়ে চিকিৎসক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে মারধর, খুনের চেষ্টা ও খুনের ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিস। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে চিকিৎসক অভিযোগ করেছেন, জুয়া ও নেশার জন্য হামেশাই টাকা দাবি করত তপন। টাকা না দিলেই সে অশান্তি করত। এমনকি খুনের হুমকিও দিত। বারবার ঝামেলার পরও কেন তপনকে কাজে রাখা হয়েছিল এনিয়ে জানতে চাওয়া হলে চিকিৎসক বলেন, বিষয়টি স্ত্রী দেখত। অনেকদিন ধরে তপন কাজ করছে। ঘটনার পর সে ক্ষমা চাইত। পুরানো লোক হওয়ায় স্ত্রী তাকে ক্ষমা করে দিয়ে কাজে নিত। এদিন আদালত চত্বরে পুলিসের গাড়িতে ওঠার আগে তপন বলে, ইদানীং ম্যাডাম সবকিছুতেই বাধা দিতেন। রাগের মাথায় মেরেছি।

About admin

Check Also

The fifth short film festival was organized in Burdwan

বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *