বিপুন ভট্টাচার্য, গুসকরা (পূর্ব বর্ধমান) :- লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার অনেক আগেই ঘর গোছাতে গিয়ে খোদ তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন দলের সব পুরনো কর্মীদের নিয়ে লোকসভা নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। ৪২–এ ৪২টি আসনই তাঁরা দখল করতে চান। কিন্তু দলের সুপ্রিমোর নির্দেশ যে জেলায় জেলায় দায়িত্বপ্রাপ্তদের কানে যায়নি তা লোকসভা নির্বাচনের মুখে আরও একবার প্রমাণিত হতে চলেছে। খোদ বীরভূমের অনুব্রত মণ্ডলের গড় গুসকরাতেই গুসকরা পুরসভার একাধিক বিদায়ী কাউন্সিলার লোকসভা ভোটের প্রচার থেকে নিজেদের সরিয়ে রেখে দিয়েছেন। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র আলোড়ন পড়ে গেছে গুসকরা সহ গোটা আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকায়। বিদায়ী কাউন্সিলারদের বেশ কয়েকজন জানিয়েছেন, সম্প্রতি গুসকরা কলেজে অনুব্রত মণ্ডল দলীয় কর্মীসভা করেছিলেন। সেখানেও তাঁদের ডাকা হয়নি। এমনকি এই ভোট প্রচারেও তাঁদের ডাকাই হয়নি। এতে তাঁরা অপমানিতও। তাই নির্বাচনের জন্য তাঁরা ইতিমধ্যেই দেওয়ালে দেওয়ালে চুন লাগিয়ে তৈরী হলেও দল তাঁদের না ডাকায় তাঁরা ঘরে বসে রয়েছেন। কয়েকজন কাউন্সিলার জানিয়েছেন, ওই চুন দেওয়া দেওয়ালে তাঁরা কি লিখবেন তা কিছুদিনের মধ্যেই পরিষ্কার হবে। একজন কাউন্সিলার জানিয়েছেন, ঘাসফুল ছাগলে খায় আর পদ্মফুলে লক্ষ্মী লাভ হয়। তাই তাঁরা এখন এই বিষয় নিয়েই চিন্তা করছেন। গুসকরা পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলার রাখি মাজি জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে কলেজমাঠে দলের কর্মী সম্মেলনে তাঁকে ডাকা হয়নি। দলের একজন কর্মী হিসাবে স্বীকৃতি পাননি তিনি। তাতে তিনি অপমানিত বোধ করেছেন। সেই কারনেই তাঁরা চুপচাপ বসে আছেন। গুসকরা পুরসভা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল বলেন, যেদিন অনুব্রত মণ্ডল কলেজমাঠে কর্মী সম্মেলন করেছিলেন সেদিন অংশ নেওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল। দলের স্থানীয় নেতৃত্বকে বারবার জিজ্ঞাসা করেছিলেন কর্মী সম্মেলনে যাবেন কিনা। কিন্তু সেদিন তাঁকে বলা হয়েছিল দলের তরফে যাওয়ার কোনও নির্দেশ নেই। তাই তাঁকে সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি। দলের কাছেই এখন অপমানিত হচ্ছেন। তাই বসে রয়েছেন। গুসকরা পুরসভার তৃণমূলের আর এক বিদায়ী কাউন্সিলর মল্লিকা চোংদার জানিয়েছেন, এক সময় জীবনপাত করে দল করেছেন। অন্তসত্তা অবস্থাতেও দলের হয়ে খেটেছিলেন। এখন দলের কাছে কোনও সন্মান নেই । তাই তিনি এখনও ভোটপ্রচারে নামেননি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে গুসকরা শহর এলাকায় দেওয়াল লিখনের জন্য তৃণমূল কংগ্রেস থেকে প্রতি ওয়ার্ড পিছু কিছু টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই টাকা ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলরদের কাছে দিতে গেলেও নিতে রাজি হননি বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলররা। যদিও এব্যাপারে আউশগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার জানিয়েছেন, এটা সম্পূর্ণই মিডিয়ার প্রচার। সময় এলেই সবাই প্রচারে নামবে।
Check Also
বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …