Breaking News

বর্ধমানে দিলীপ ঘোষকে ‘গো-ব্যাক’ শ্লোগান, বিজেপি প্রার্থীর পাল্টা উত্তর ‘চুপ কর পাগলা’

Trinamool supporters chanted 'go-back' to Dilip Ghosh, BJP candidate's reply was 'shut up, madman'

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- ভোটের দিন যতই এগিয়ে আসছে ততই কি একাকী হয়ে যাচ্ছেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের দাপুটে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ? মঙ্গলবার সকালে সেই প্রশ্নই আবার উসকে উঠল। প্রতিদিনের মত এদিনও দিলীপবাবু আগাম ঘোষণা করেই প্রাতঃভ্রমণে বের হন বর্ধমানের বাজেপ্রতাপপুর বাজারে। কিন্তু তাঁকে রিসিভ করার জন্য ছিল না কোনো বিজেপি ছোট-বড় নেতাই। অগত্যা দিলীপবাবু বাজেপ্রতাপপুর বাজারে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে কাটোয়া রোড ধরে এগিয়ে যান হটুদেওয়ান এলাকায়। কিন্তু রাস্তায় তাঁকে রিসিভ করার জন্য হাজির ছিল না কোনো নেতাই। এরপর ফের ফিরে আসেন বাজেপ্রতাপপুর বাজারে উড়ালপুলের কাছে। সেখানে গাড়ি থেকে নেমে তিনি উড়ালপুলের তলা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে যান বর্ধমান স্টেশনের ৮নং প্ল্যাটফর্মে। সঙ্গী তাঁর মেদিনীপুর থেকে আসা ৩জন নিরাপত্তারক্ষী। এই অসহায় অবস্থায় দিলীপবাবু যখন ৮নং প্ল্যাটফর্ম এলাকায় ঘুরে বেড়ালেন সেই সময় তাঁকে উদ্দেশ্য করে তৃণমূলের টোটো ইউনিয়নের সদস্যরা ছুঁড়ে দিলেন একের পর এক শ্লোগান। কেউ কেউ আওয়াজ তুললেন দিলীপ ঘোষ গো ব্যাক। কেউ কেউ বললেন, ‘জয় বাংলা’। কেউ কেউ বললেন গরুর দুধে সোনা খুঁজছে দিলীপ পাগল। আর লাগাতার এই শ্লোগান কার্যত হজম করতে হল দিলীপবাবুকে সাতসকালে। যদিও এরই মাঝে দিলীপবাবু বললেন ‘চুপ কর পাগলা’। মঙ্গলবার সকালে এই ঘটনা যখন ঘটেছে তখন দিলীপবাবুর পাশে নেই কোনো বিজেপি নেতৃত্ব। এমনকি এই এলাকার মণ্ডল সভাপতিরও দেখা মেলেনি। জানা গেছে, দিলীপবাবু বাজেপ্রতাপপুর এলাকায় আসার পর এই এলাকার বিজেপির একাধিক নেতাকে ফোন করা হলেও কাউকেই পাওয়া যায়নি। অনেকেরই ফোন বন্ধ ছিল। কেউ কেউ ফোন তোলেননি। ফলে কার্যত এদিন রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসতে থাকেন দিলীপবাবু। ৮নং প্ল্যাটফর্ম থেকে বেড়িয়ে তিনি ফের বাজেপ্রতাপপুর বাজারে আসেন চা খেতে। অন্যান্য ক্ষেত্রে তাঁর জন্য চায়ের দোকান লাগোয়া চেয়ার টেবিল পাতা থাকলেও এদিন তার কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। বাধ্য হয়েই একটি চায়ের দোকানের বেঞ্চে বসে পড়েন দিলীপবাবু। তাঁর একজন সঙ্গী ছুটে গিয়ে নিয়ে আসেন এদিনের খবরের কাগজ। তাতেই চোখ বোলান ক্ষুব্ধ দিলীপ। গো ব্যাক স্লোগান শুনতে হওয়া সম্পর্কে দিলীপবাবু বলেন, দু চার পিস আছে, পেটে লাথ পরেছে তো এবারে। ৪ তারিখ অবধি সব আওয়াজ ঠান্ডা হয়ে যাবে। কারণ এই যে লুটপাট চলছে, ওরা জানে আমি জিতলে এসব বন্ধ হয়ে যাবে। তাই কোথাও কোথাও ঘেউ ঘেউ করছে সকালবেলায় একটু। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, বিজেপির ক্ষমতা নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চুল স্পর্শ করার। এব্যাপারে দিলীপবাবু বলেন, না না,ওনাকে স্পর্শ করবো কেন? ওনার গায়ে এত পাপ লেগে আছে কেউ স্পর্শ করবে না। ওনাকে সরাবো আমরা ওখান থেকে। যাতে আর অপরাধ, অন্যায় করতে না পারেন। পশ্চিমবঙ্গকে অপরাধে ভরিয়ে দিয়েছেন। অন্যায়, দুর্নীতিতে ভরিয়ে দিয়েছেন। সেই জন্য ওনাকে বিদায় করতে হবে। সম্মানের সাথে। কি খাবো না খাবো বিজেপি ঠিক করছে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দিলীপবাবু বলেন, কি খাই কাউকে বলার দরকার নেই। ওনারা কি খান? খালি কাটমানি আর তোলাবাজি করে। কাটমানি যারা খায় তাদের কি খাওয়া বাকি আছে। আর আমরা কাটমানি খাওয়াও বন্ধ করব। মেদিনীপুর ছেড়ে বর্ধমানে প্রার্থী হওয়ায় মতার কটাক্ষের জবাবে তিনি বলেন, আমি ওনাকে বলে দিচ্ছি, উনি কেন গিয়েছিলেন মেদিনীপুরে কান মোলা খেতে, নাকে ঝামা দিয়েছে। দিলীপ ঘোষ এখানে এসেছে জিততে, উনি তো হেরে এসেছেন। মেদিনীপুরের লোকজন ভালো করে দিয়ে দিয়েছে ট্রিটমেন্ট করে। আর কোনো দিন মেদিনীপুরে দাঁড়াবেন না। দিলীপ ঘোষ পশ্চিমবাংলার যেকোনো জায়গায় জিততে পারে, আর বর্ধমানে জিতে দেখাবে। অহলুবালিয়া কত টাকা কোথায় দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন সেই নাম তিনি প্রকাশ করতে পারেন। দিলীপবাবু বলেন, সব টাকার উনি হিসাব দিয়ে দিয়েছেন। জীবনে তো হিসাব দিলেন না মমতা ব্যানার্জী। জমি কার কাছ থেকে নিয়েছেন? বাড়ি করেছেন কোথায়? সেই জমির মালিক কে? কাগজ কোথায়? কিচ্ছু দেননি। এবং এই যে ২ লক্ষ ২৮ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রের টাকা হিসাব দেন নি। আলুওয়ালিজি পাই পাই হিসাব দিয়ে প্রেস ডেকে বলে দিয়েছেন। দম আছে ওনাদের? একজন এমপি দেখাক, সব লুটপাট করেছে। সেই জন্য মমতা ব্যানার্জি বড় বড় কথা বলবেন না। বড় কথা বলার দিন চলে গেছে, এখন হিসাব দিতে হবে আর হিসাব আমরা নেবোই। ওনার পশ্চিমবাংলার লোক ওনার টিকিটে দাঁড়াতে চায়না, পয়সা দিলেও দাঁড়ায় না। তাই গুজরাট থেকে, বিহার থেকে লোক আনতে হয়, উনি বড় বড় কথা বলছেন কেন? বিজেপি বাংলার মেয়েদের সম্ভ্রম নিয়ে খেলছে বলে শশী পাঁজা বলেছেন। এর উত্তরে দিলীপবাবু বলেন, কে সম্ভ্রম নিয়ে খেলেছে? ওনারা ৫০০ টাকা দিয়ে পিঠে বানাবার জন্য বাড়িতে, রাত্রিবেলা পার্টি অফিসে তুলে নিয়ে এসে ফুর্তি করতো মেয়েদের, সন্দেশখালি তার প্রমাণ। আজ এক্সপোজ হয়ে গেছে বলে বড় বড় কথা বলছে আর তৃণমূল লোককে দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন, জবাবটা পেয়ে যাবেন ভোটে।

About admin

Check Also

The fifth short film festival was organized in Burdwan

বর্ধমানে আয়োজিত হলো পঞ্চম শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- বর্ধমান চলচ্চিত্র চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হলো শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। রবিবার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *