Breaking News

দিদির দূত বিধায়ককে গ্রামে ঢুকতেই দিল না গ্রামবাসীরা, প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়ে গ্রামে না ঢুকেই ফিরে গেলেন গলসীর বিধায়ক

Villagers did not allow 'Didir Dut' Galsi MLA to enter the village in 'Didir Suraksha Kavach' programme.

গলসী (পূর্ব বর্ধমান) :- দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচীতে গিয়ে গ্রামবাসীদের প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়লেন দিদির দূত তথা গলসীর বিধায়ক নেপাল ঘড়ুই। বিক্ষোভের মুখে পরে গ্রাম থেকে ফিরে যেতে হল বিধায়ককে। গলসীর কুরকুবা গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়কৃষ্ণপুরের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ভোটের পর এলাকায় আর দেখা যায়নি বিধায়ককে। নানান অভাব অভিযোগ করেও হয়নি সুরাহা। গ্রামের মানুষ আবাস যোজনায় বাড়ি পাননি, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্নার মান খারাপ। রাস্তাঘাট বেহাল, নেই পানীয় জলের ব্যবস্থা। পাশাপাশি দলীয় কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যকে না জানিয়ে কর্মসূচী করতে আসেন বিধায়ক। এমনকি গ্রামের দলীয় কর্মীদেরও জানানো হয়নি। শনিবার সকালে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ায় গোটা গলসী অঞ্চলে। দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচীর অঙ্গ হিসাবে এদিন সকালে গলসীর জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে যান গলসীর তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক নেপাল ঘড়ুই। কিন্তু এদিন গ্রামে ঢোকার মুখেই জয়কৃষ্ণপুর সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে গ্রামবাসীদের প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েন বিধায়ক ও তাঁর অনুগামীরা। গ্রামবাসীরা একের পর এক নানান অভিযোগ তোলেন। দীর্ঘক্ষণ গ্রমবাসীদের এই বিক্ষোভের জেরে জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে না ঢুকেই বিধায়ক ফিরে যান। এলাকার তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য মণ্টু লোহার জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী পাপিয়া লোহার জয়কৃষ্ণপুর পূর্ব ৯নং সংসদের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য। কিন্তু বিধায়ক তাঁকে এই গ্রামে আসার ব্যাপারে কিছুই জানান নি। মণ্টুবাবু জানিয়েছেন, দলের যাঁরা পুরনো কর্মী তাঁদের বাদ দিয়ে বিধায়ক চলছেন, তাই তাঁরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। গ্রামের বাসিন্দা আশা লোহার জানিয়েছেন, নির্বাচনের সময় তাঁরা বিধায়কের ছবি দেখেছিলেন। কোনোদিন গ্রামে আসেনি। এবারই প্রথম দেখলেন। গ্রামের রাস্তা নেই, তাঁরা বাড়ি পাননি। পাচ্ছেন না সঠিকভাবে রেশনের মালপত্রও। বাড়ির জন্য ছবি তুলে নিয়ে গেছিল। এখনও কিছুই হয়নি। তাই এদিন বিধায়ককে তাঁরা তাঁদের ক্ষোভ জানিয়েছেন। আশাদেবী জানিয়েছেন, বিধায়ক ভাল কাজ করলে তবেই তাঁকে গ্রামে ঢুকতে দেবেন। গ্রামের তৃণমূল নেতা দীপক দাস জানিয়েছেন, এই গ্রামে ২৫-৩০টি ভূমিহীন পরিবার রয়েছে। থানায় বসে মীমাংসা হবার পরেও এখনও জমির পাট্টা পায়নি। ৭২ জন গাছ লাগিয়েও গাছের পাট্টা পায়নি। তাই এদিন বিধায়ককে আটকে তাঁরা ক্ষোভ দেখিয়েছেন। যদিও এব্যাপারে গলসী ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি সফর মল্লিক জানিয়েছেন, তেমন কিছুই ঘটেনি। ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ -এই কর্মসূচীর অঙ্গ হিসাবেই এলাকার মানুষের কাছ থেকে বিধায়ক জানতে চান, তাঁদের কোনো সমস্যা আছে কিনা, বা সরকারী সুযোগ সুবিধা তাঁরা পাচ্ছেন কিনা। সেই সময় এলাকার কয়েকজন তাঁদের কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেন। অন্যদিকে, এব্যাপারে খোদ বিধায়ক নেপাল ঘড়ুই জানিয়েছেন, জয়কৃষ্ণপুর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবার সময় সেখানে কয়েকজন তাঁকে কিছু সমস্যার কথা জানিয়েছেন। যার মধ্যে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ছাত্রছাত্রীদের কেন আধখানা ডিম দেওয়া হচ্ছে সেই বিষয়টিও যেমন তাঁরা জানিয়েছেন, তেমনি কেন মানুষের বদলে মেশিনে ধান কাটা হচ্ছে সেই অভিযোগও তাঁরা করেন। এছাড়াও ১০০ দিনের কাজ না পাওয়া, আবাস যোজনায় বাড়ি না পাওয়ার মত অভিযোগও করেছেন। বিধায়ক জানিয়েছেন, ১০০ দিনের কাজের টাকা এবং আবাস যোজনা নিয়ে বিশেষত গলসী ২ ব্লককে সম্পূর্ণ বাদ দেওয়ার ঘটনায় তাঁরা লড়াই করছেন। বাসিন্দাদের সেই কথা এদিন বোঝানো হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের ছোট ছোট যে সমস্ত সমস্যা রয়েছে সেগুলি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে এই কর্মসূচীর অঙ্গ হিসাবে। তিনি জানিয়েছেন, যথারীতি জয়কৃষ্ণপুরের পর তিনি কুরকুবা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে বৈঠকও করেছেন। কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি। এদিনের কর্মসূচী সঠিক ভাবেই পালিত হয়েছে। অন্যদিকে, এই ঘটনা সম্পর্কে বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র জানিয়েছেন, গ্রামবাসীদের তাঁরা শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন এই ঘটনায়। গ্রামবাসীরা যে সাহস জুগিয়ে বিধায়কের সামনে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এটা প্রশংসার যোগ্য। তিনি জানিয়েছেন, শুধু গলসী নয়, গোটা রাজ্য জুড়েই মানুষ যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ তা প্রমাণ হতে শুরু করেছে গলসী দিয়ে।

About admin

Check Also

More than a thousand intraperitoneal hydatid cysts removed from 18-year-old girl's stomach

১৮ বছরের তরুণীর পেট থেকে বের হল হাজারেরও বেশি বেলুনের ন্যায় তরলপূর্ণ সিস্ট

বর্ধমান (পূর্ব বর্ধমান) :- এক তরুণীর পেট থেকে বের হল হাজারেরও বেশী বেলুনের ন্যায় তরলপূর্ণ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *