কালনা (পূর্ব বর্ধমান) :- হাতিপোতা গ্রামে উদ্বোধন হলো কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় স্মৃতি বিজড়িত ‘দেবদাস স্মৃতি মেলা’। কালনা ১ ব্লকের নান্দাই গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতিপোতা গ্রামে এই মেলা এবছর ২৪ বছরে পা দিলো। এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ বিশাল আকারের মিষ্টির জন্য ‘মিষ্টি মেলা’ নামেও পরিচিতি পেয়েছে। মঙ্গলবার মেলার উদ্বোধন করেন অভিনেত্রী পায়েল সরকার। উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবী ও শিল্পপতি সুব্রত পাল, পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ আরতি খাঁন, কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতি কর্মাধ্যক্ষ চঞ্চল সিংহ রায়, নান্দাই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপ প্রধান-সহ অন্যান্যরাও। মেলা চলবে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত। মেলার প্রধান উদ্যোক্তা ডক্টর রেজাউল ইসলাম মোল্লা (রানা) জানিয়েছেন, প্রত্যেকদিনই স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি থাকছেন নামি শিল্পীরাও। ১৭ জানুয়ারি উপস্থিত থাকবেন রাহুল দত্ত, অবন্তিকা। ১৮ জানুয়ারি দেবদ্বীপ ব্যানার্জী, অর্কদ্বীপ মিশ্রা। ১৯ জানুয়ারি অন্তরা দেবনাথ, অনিন্দিতা চন্দা, শোভন গাঙ্গুলী, ঋত্বীকা সেন এবং ২০ জানুয়ারি রাজা, রানা, কৌশানী মুখার্জী। এই মেলার ইতিহাস প্রসঙ্গে রেজাউল ইসলাম মোল্লা জানিয়েছেন, অমর কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যাযয়ের ‘দেবদাস’ উপন্যাসের অন্যতম মহিলা চরিত্র পার্বতীর শ্বশুরবাড়ি এই হাতিপোতা গ্রামে। তাঁরা মনে করেন দেবদাস উপন্যাসে বর্ণিত হাতিপোতা গ্রাম আসলে এটাই। এবং গ্রামের অনেকেই মনে করেন দেবদাস উপন্যাসের কাহিনি সম্পূর্ণ কাল্পনিক নয়। উপন্যাস অনুযায়ী, পান্ডুয়ায় ট্রেন থেকে নেমে গরুর গাড়িতে চেপে প্রেমিকা পার্বতীকে শেষ বারের মতো দেখতে এই হাতিপোতা গ্রামে এসেছিলেন প্রেমিক দেবদাস। কিন্তু শেষ দেখা হয়নি দেবদাসের। পার্বতীর শ্বশুর বাড়ির সামনে একটি অশ্বত্থতলার বাঁধানো বেদিতে দেবদাসের মৃত্যু হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই মনে করেন, এই হাতিপোতা গ্রামেরই জমিদার ছিলেন ভুবনমোহন চৌধুরি। তাঁরই স্ত্রী ছিলেন তালসোনাপুরের পার্বতী। শরৎচন্দ্র নিজেও এই হাতিপোতা গ্রামে এসেছিলেন বলে অনেকেই মনে করেন। আর এই বিখ্যাত উপন্যাস ‘দেবদাস’-এর সাথে তাঁদের গ্রামের যোগ থাকাতেই বিষয়টিকে তাঁরা স্মরণীয় করে রাখতে শুরু করেছেন এই হাতিপোতা দেবদাস স্মৃতি মেলা। প্রতিবছর ১৬ জানুয়ারি অমর কথাশিল্পীর শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণ দিবসে তাঁর স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হাতিপোঁতা গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ‘দেবদাস স্মৃতি মেলা’। রেজাউল ইসলাম মোল্লা জানিয়েছেন, দেবদাস স্মৃতি মেলার অন্যতম আকর্ষণ পেল্লাই সাইজের মিষ্টি। ল্যাংচার আকারের বিভিন্ন ওজনের মিষ্টির মেলে এই মেলায়। ১ কেজি, ২ কেজি, ৩ কেজি এমনকি ৫ কেজি ওজনেরও মিষ্টি পাওয়া যায়। ৫ টাকা থেকে শুরু করে ওজন অনুযায়ী প্রতিটি মিষ্টি ২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয় এই মেলায়। একটি মিষ্টি কিনেই অনেকে মিলে খাওয়া যায়। কালনা মহকুমা এলাকা ছাড়াও পূর্ব বর্ধমান জেলা-সহ আশেপাশের অন্যান্য জেলা থেকে অনেকেই আসেন এই মেলায়। কিনে নিয়ে যান এই পেল্লায় মাপের মিষ্টি। তাই অনেকের মুখে মুখে এই মেলার নাম হয়ে গেছে মিষ্টি মেলা বা হাতিপোতা দেবদাস স্মৃতি মিষ্টি মেলা।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
দেবদাস
ষোড়শ পরিচ্ছেদ
গাড়ি যখন পাণ্ডুয়া স্টেশনে আসিয়া উপস্থিত হইল, তখন ভোর হইতেছে। সারারাত্রি বৃষ্টি হইয়াছিল, এখন থামিয়াছে। দেবদাস উঠিয়া দাঁড়াইল। নীচে ধর্ম্মদাস নিদ্রিত। ধীরে ধীরে একবার তাহার ললাট স্পর্শ করিল, লজ্জায় তাহাকে জাগাইতে পারিল না। তার পর দ্বার খুলিয়া আস্তে আস্তে বাহির হইয়া পড়িল। গাড়ি সুপ্ত ধর্ম্মদাসকে লইয়া চলিয়া গেল। কাঁপিতে কাঁপিতে দেবদাস স্টেশনের বাহিরে আসিল। একজন ঘোড়ার গাড়ির গাড়োয়ানকে ডাকিয়া বলিল, বাপু, হাতীপোতায় নিয়ে যেতে পারবে?
সে একবার মুখপানে চাহিল, একবার এদিক-ওদিক চাহিল, তাহার পর কহিল, না বাবু, রাস্তা ভাল নয়—ঘোড়ার গাড়ি এ বর্ষায় ওখানে যেতে পারবে না।
দেবদাস উদ্বিগ্ন হইয়া প্রশ্ন করিল, পালকি পাওয়া যায়?
গাড়োয়ান বলিল, না।
আশঙ্কায় দেবদাস বসিয়া পড়িল—তবে কি যাওয়া হবে না? তাহার মুখের উপরেই তাহার অন্তিম অবস্থা গাঢ় মুদ্রিত ছিল, অন্ধেও তাহা পড়িতে পারিত।
গাড়োয়ান কহিল, বাবু, একটা গরুর গাড়ি ঠিক ক’রে দেব?
দেবদাস জিজ্ঞাসা করিল, কতক্ষণে পৌঁছবে?
গাড়োয়ান বলিল, পথ ভাল নয় বাবু, বোধ হয় দিন-দুই লেগে যাবে।
দেবদাস মনে মনে হিসাব করিতে লাগিল, দু’ দিন বাঁচব তো? কিন্তু পার্বতীর কাছে যাইতেই হইবে। তাহার অনেকদিনের অনেক মিথ্যা কথা, অনেক মিথ্যা আচরণ স্মরণ হইল। কিন্তু শেষদিনের এ প্রতিশ্রুতি সত্য করিতেই হইবে। যেমন করিয়া হোক, একবার তাহাকে শেষ দেখা দিতেই হইবে! কিন্তু এ জীবনের মেয়াদ যে আর বেশী বাকি নাই! সেই যে বড় ভয়ের কথা!
দেবদাস গরুর গাড়িতে যখন উঠিয়া বসিল, তখন জননীর কথা মনে করিয়া তাহার চোখ ফাটিয়া জল আসিয়া পড়িল। আর একখানি স্নেহকোমল মুখ আজ জীবনের শেষক্ষণে নিরতিশয় পবিত্র হইয়া দেখা দিল—সে মুখ চন্দ্রমুখীর। যাহাকে পাপিষ্ঠা বলিয়া সে চিরদিন ঘৃণা করিয়াছে, আজ তাহাকেই জননীর পাশে সগৌরবে ফুটিয়া উঠিতে দেখিয়া তাহার চোখ দিয়া ঝরঝর করিয়া জল ঝরিয়া পড়িতে লাগিল। এ জীবনে আর দেখা হইবে না, হয়ত বহুদিন পর্যন্ত সে খবরটাও পাইবে না। তবু পার্বতীর কাছে যাইতে হইবে। দেবদাস শপথ করিয়াছিল, আর একবার দেখা দিবেই। আজ এ প্রতিজ্ঞা তাহাকে পূর্ণ করিতেই হইবে। পথ ভাল নয়। বর্ষার জল কোথাও পথের মাঝে জমিয়া আছে, কোথাও বা পথ ভাঙ্গিয়া গিয়াছে। কাদায় সমস্ত রাস্তা পরিপূর্ণ। গরুর গাড়ি হটর হটর করিয়া চলিল। কোথাও নামিয়া চাকা ঠেলিতে হইল, কোথাও গরু দুটোকে নির্দয়রূপে প্রহার করিতে হইল—যেমন করিয়াই হোক, এ ষোল ক্রোশ পথ অতিক্রম করিতেই হইবে। হুহু করিয়া ঠাণ্ডা বাতাস বহিতেছিল। আজও তাহার সন্ধ্যার পর প্রবল জ্বর দেখা দিল। সে সভয়ে প্রশ্ন করিল, গাড়োয়ান, আর কত পথ?
গাড়োয়ান জবাব দিল, এখনো আট-দশ কোশ আছে বাবু।
শিগ্গির নিয়ে চল্ বাপু, তোকে অনেক টাকা বকশিশ দেব। পকেটে একখানা এক শ’ টাকার নোট ছিল, তাই দেখাইয়া কহিল, এক শ’ টাকা দেব, নিয়ে চল্।
তাহার পর কেমন করিয়া কোথা দিয়া সমস্ত রাত্রি গেল, দেবদাস জানিতেও পারিল না। অসাড় অচেতন; সকালে সজ্ঞান হইয়া কহিল, ওরে, আর কত পথ? এ কি ফুরোবে না?
গাড়োয়ান কহিল, আরও ছয় কোশ।
দেবদাস দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া কহিল, একটু শিগগির চল্ বাপু, আর যে সময় নেই।
গাড়োয়ান বুঝিতে পারিল না, কিন্তু নূতন উৎসাহে গরু ঠেঙ্গাইয়া গালিগালাজ করিয়া চলিল। প্রাণপণে গাড়ি চলিতেছে, ভিতরে দেবদাস ছটফট করিতেছে। কেবল মনে হইতেছে, দেখা হবে তো? পৌঁছব তো? দুপুরবেলা গাড়ি থামাইয়া গাড়োয়ান গরুকে খাবার দিয়া, নিজে আহার করিয়া আবার উঠিয়া বসিল। কহিল, বাবু, তুমি খাবে না কিছু? না বাপু, তবে বড় তেষ্টা পেয়েচে, একটু জল দিতে পার?
সে পথিপার্শ্বস্থ পুষ্করিণী হইতে জল আনিয়া দিল। আজ সন্ধ্যার পর জ্বরের সঙ্গে দেবদাসের নাকের ভিতর হইতে সড়সড় করিয়া ফোঁটা ফোঁটা রক্ত পড়িতে লাগিল। সে প্রাণপণে নাক চাপিয়া ধরিল। তাহার পর বোধ হইল,দাঁতের পাশ দিয়াও রক্ত বাহির হইতেছে, নিশ্বাস-প্রশ্বাসেও যেন টান ধরিয়াছে। হাঁপাইতে হাঁপাইতে কহিল, আর কত?
গাড়োয়ান কহিল, আর কোশ-দুই; রাত্রি দশটা নাগাদ পৌঁছব।
দেবদাস বহুকষ্টে মুখ তুলিয়া পথের পানে চাহিয়া কহিল, ভগবান!
গাড়োয়ান প্রশ্ন করিল, বাবু, অমন করচেন কেন?
দেবদাস এ-কথার জবাব দিতেও পারিল না। গাড়ি চলিতে লাগিল, কিন্তু দশটার সময় না পৌঁছিয়া প্রায় রাত্রি বারোটায় গাড়ি হাতীপোতার জমিদারবাবুর বাটীর সম্মুখে বাঁধানো অশ্বত্থতলায় আসিয়া উপস্থিত হইল।
গাড়োয়ান ডাকিয়া কহিল, বাবু, নেমে এসো।
কোন উত্তর নাই। আবার ডাকিল, তবু উত্তর নাই। তখন সে ভয় পাইয়া প্রদীপ মুখের কাছে আনিল, বাবু, ঘুমালে কি?
দেবদাস চাহিয়া আছে; ঠোঁট নাড়িয়া কি বলিল, কিন্তু শব্দ হইল না। গাড়োয়ান আবার ডাকিল, ও বাবু!
দেবদাস হাত তুলিতে চাহিল, কিন্তু হাত উঠিল না; শুধু তাহার চোখের কোণ বাহিয়া দু’ ফোঁটা জল গড়াইয়া পড়িল। গাড়োয়ান তখন বুদ্ধি খাটাইয়া অশ্বত্থতলার বাঁধানো বেদীটার উপর খড় পাতিয়া শয্যা রচনা করিল; তাহার পর বহুকষ্টে দেবদাসকে তুলিয়া আনিয়া তাহার উপর শয়ন করাইয়া দিল। বাহিরে আর কেহ নাই, জমিদারবাটী নিস্তব্ধ, নিদ্রিত। দেবদাস বহুক্লেশে পকেট হইতে এক শ’ টাকার নোটটা বাহির করিয়া দিল। লণ্ঠনের আলোকে গাড়োয়ান দেখিল, বাবু তাহার পানে চাহিয়া আছে, কিন্তু কথা কহিতে পারিতেছে না। সে অবস্থাটা অনুমান করিয়া নোট লইয়া চাদরে বাঁধিয়া রাখিল। শাল দিয়া দেবদাসের মুখ পর্যন্ত আবৃত; সম্মুখে লণ্ঠন জ্বলিতেছে, নূতন বন্ধু পায়ের কাছে বসিয়া ভাবিতেছে। ভোর হইল। সকালবেলা জমিদারবাটী হইতে লোক বাহির হইল,— এক আশ্চর্য দৃশ্য। গাছতলায় একজন লোক মরিতেছে। ভদ্রলোক। গায়ে শাল, পায়ে চকচকে জুতো, হাতে আংটি। একে একে অনেক লোক জমা হইল। ক্রমে ভুবনবাবুর কানে এ কথা গেল, তিনি ডাক্তার আনিতে বলিয়া নিজে উপস্থিত হইলেন। দেবদাস সকলের পানে চাহিয়া দেখিল; কিন্তু তাহার কণ্ঠরোধ হইয়াছিল— একটা কথাও বলিতে পারিল না, শুধু চোখ দিয়া জল গড়াইয়া পড়িতে লাগিল। গাড়োয়ান যতদূর জানে বলিল, কিন্তু তাহাতে সুবিধা হইল না। ডাক্তার আসিয়া কহিল, শ্বাস উঠেছে, এখনই মরবে।
সকলেই কহিল, আহা!
উপরে বসিয়া পার্ব্বতী এ কাহিনী শুনিয়া বলিল, আহা!
কে একজন দয়া করিয়া মুখে একফোঁটা জল দিয়ে গেল। দেবদাস তাহার পানে করুণদৃষ্টিতে একবার চাহিয়া দেখিল, তাহার পর চক্ষু মুদিল। আরও কিছুক্ষণ বাঁচিয়া ছিল, তাহার পরে সব ফুরাইল। এখন কে দাহ করিবে, কে ছুঁইবে, কি জাত ইত্যাদি লইয়া তর্ক উঠিল। ভুবনবাবু নিকটস্থ পুলিশ-স্টেশনে সংবাদ দিলেন। ইন্স্পেক্টর আসিয়া তদন্ত করিতে লাগিল। প্লীহা-লিভারে মৃত্যু। মুখে রক্তের দাগ। পকেট হইতে দুইখানা পত্র বাহির হইল। একখানা তালসোনাপুরের দ্বিজদাস মুখুয্যে বোম্বায়ের দেবদাসকে লিখিতেছে—টাকা পাঠান এখন সম্ভব নয়। আর একটা কাশীর হরিমতী দেবী উক্ত দেবদাস মুখুয্যেকে লিখিতেছে—কেমন আছ?
বাঁ হাতে উলকি দিয়া ইংরাজী অক্ষরে নামের আদ্যাক্ষর লেখা আছে। ইন্স্পেক্টরবাবু তদন্ত করিয়া কহিলেন, হ্যাঁ, লোকটা দেবদাস বটে।
হাতে নীলপাথর দেওয়া আংটি—দাম আন্দাজ দেড় শ’, গায়ে একজোড়া শাল—দাম আন্দাজ দুই শ’। জামাকাপড় ইত্যাদি সমস্তই লিখিয়া লইলেন। চৌধুরীমহাশয় ও মহেন্দ্রনাথ উভয়েই উপস্থিত ছিলেন। তালসোনাপুর নাম শুনিয়া মহেন্দ্র কহিল, ছোটমার বাপের বাড়ির লোক, তিনি দেখলে—
চৌধুরীমহাশয় তাড়া দিলেন, সে কি এখানে মড়া সনাক্ত করতে আসবে নাকি? দারোগাবাবু সহাস্যে কহিলেন, পাগল আর কি!
ব্রাহ্মণের মৃতদেহ হইলেও, পাড়াগাঁয়ে কেহ স্পর্শ করিতে চাহিল না; কাজেই চণ্ডাল আসিয়া বাঁধিয়া লইয়া গেল। তার পর কোন শুষ্ক পুষ্করিণীর তটে অর্ধদগ্ধ করিয়া ফেলিয়া দিল—কাক-শকুন উপরে আসিয়া বসিল, শৃগাল- কুক্কুর শবদেহ লইয়া কলহ করিতে প্রবৃত্ত হইল। তবুও যে শুনিল, সেই কহিল, আহা! দাসী-চাকরও বলাবলি করিতে লাগিল, আহা ভদ্দরলোক, বড়লোক! দু’শ’ টাকা দামের শাল, দেড় শ’ টাকা দামের আংটি! সে-সব এখন দারোগার জিম্মায় আছে; পত্র দু’খানাও তিনি রাখিয়াছেন।